অনলাইন ডেস্ক :: ১৬ দিন অতিবাহিত হলেও বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কম্পাউন্ডের ডক্টরস হেস্টেলের ১০৫ নম্বর কক্ষ থেকে আকস্মিকভাবে নিখোঁজ হওয়া চিকিৎসক এএসএম সাইদ সোহাগের সন্ধান মেলেনি। গত ২৪ জুন ভোর রাতে তিনি নিখোঁজ হন।
সাইদ সোহাগ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নি শেষ করে পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেনিং (পিজিটি) নিচ্ছিলেন। ১০৫ নম্বর কক্ষে তার ভাগ্নেকে নিয়ে থাকতেন। ভাগ্নে সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিল।
এ ঘটনায় তার বড় ভাই শামীম সরোয়ার গত ২৬ জুলাই কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। নিখোঁজ সাইদ সোহাগ ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার স্বরুপপুর গ্রামের মশিউর রহমানের ছেলে।
ডক্টরস হোস্টেলের আবাসিক বাসিন্দারা জানান, সাইদ সোহাগ তার ভাগ্নেকে নিয়ে ১০৫ নম্বর কক্ষে থাকতেন এবং মেডিকেলে অনারিয়াম চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করতেন। ভাগ্নে সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র ছিল। নিখোঁজ হওয়ার এক সপ্তাহ আগে থেকেই তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। ঘটনার দিন ২৩ জুন গভীর রাতে সাইদ সোহাগ তার ভাগ্নের ডান হাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। এতে সে মারাত্মকভাবে আহত হয়ে হোস্টেলের পাহারাদার মনিরের কাছে যায়। মনির তার হাত বেধে দেন।
বিষয়টি শোনার পর হোস্টেলের বাসিন্দারা ওই কক্ষে গেলেও সাইদ সোহাগকে আর পাওয়া যায়নি। চারতলা হোস্টেলের প্রতিটি কক্ষ থেকে শুরু করে ছাদ পর্যন্ত তল্লাশি চালানো হয়। আমাদের ধারণা ছিল ভাগ্নেকে আঘাত করে হয়তো ভয়ে তিনি পালিয়েছেন।
পাহারাদার মো. মনির জানান, ঘটনার দিন গভীর রাতে সাইদ সোহাগের ভাগ্নে হাতকাটা অবস্থায় আমার কাছে আসে। এ সময় তার ডান হাত থেকে অঝোরে রক্ত ঝরছিল। আমি সাথে সাথে হাতে ব্যান্ডেজ করে রক্তক্ষরণ বন্ধ করি। ওই সময় সে জানায় তার মামা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছে।
বিষয়টি অন্য কক্ষের ডাক্তারদের জানালে তারা লাঠিসোটা নিয়ে ওই কক্ষে গিয়ে সাইদ সোহাগের খোঁজ করেন। কিন্তু ওই সময় তিনি কক্ষে ছিলেন না। এমনকি সামনের গেট দিয়েও তিনি যাননি। ওই রাতে ভাগ্নে কক্ষ ছাড়তে চাইলেও তাকে নিষিধ করি। পরে ভাগ্নে মেডিকেলে চিকিৎসা নেয়। এরপর সাইদ সোহাগের বড় ভাই শামীম সরোয়ার এসে তার ভাগ্নেকে নিয়ে যান। ওই সময় সাইদ সোহাগের সব জিনিসপত্রও নিয়ে যান তারা। এরপর থেকে ওই কক্ষটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।
নিখোঁজ সোহাগের পিতা মশিউর রহমান জানান, ২৩ জুন রাতে তার কাছে মোবাইল আসে সোহাগ গুরুতর অসুস্থ। এরপর সোহাগের মোবাইলে রিং দিয়ে কথা বললে সে অস্বাভাবিকভাবে কথা বলে। এরপর থেকেই নিখোঁজ রয়েছে সোহাগ।
শামীম সরোয়ার বলেন, সোহাগ নিখোঁজ হওয়ার পর আমরা বরিশালের বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেছি। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। সে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় তার রুম থেকে বের হয়ে যায় বলে আমি শুনতে পেরেছি।
এ ব্যাপারে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচারক ডা. বাকির হোসেন বলেন, ডক্টরস হোস্টেলের বাসিন্দারা আমাকে জানিয়েছে ডা. সাইদ সোহাদ তার ভাগ্নেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে পালিয়েছেন। বিষয়টি পারিবারিক বলে আমরা তেমন উদ্যোগ গ্রহণ করিনি। পরবর্তীতে তার ভাই এসে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। আমরাও আইনশৃংখলা বাহিনীকে তাগিদ দিচ্ছি। তারপরও সাইদ সোহাগের পরিবার থেকে আমাদের সহায়তা চাইলে আমরা তাদের সার্বিক সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সাহাবুদ্দিন খান বলেন, আমরা নিখোঁজ সাইদ সোহাগের সন্ধানে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply