নিজস্ব সংবাদদদাতাঃ
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার না হলে কঠোর কর্মসূচির হুমকি দিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও এই আলোচিত হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হওয়ায় সরকার ও প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করেছেন তারা।
শনিবার সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার ও খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ জুড়ে ছিল ক্ষোভ।
সমাবেশে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্তের জন্য র্যাব সময় চেয়েছে, আদালতও সময় দিয়েছেন। কিন্তু কোনও তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারেনি। তারা বলে আমরা ব্যর্থ। ব্যর্থ হলে চাকরি করছেন কেন?’
তিনি আরও বলেন, ‘তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি দেওয়া ৪৮ ঘণ্টা পার হয়েছে পাঁচ বছর আগে। বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমার প্রথম দায়িত্ব সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার করা।’ তথ্যমন্ত্রী তার সিটে বসার আগে বলেছিলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমার চোখের পানি থামবে না।’ আমি জানি না তথ্যমন্ত্রীর চোখের পানি থেমেছে কিনা, তবে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। এর পিছনে এমন কী আছে যে বিচার হচ্ছে না? একের পর এক সাংবাদিক নির্যাতন হচ্ছে। সাংবাদিক হত্যা এখন সাধারণ হত্যাকাণ্ডে পরিণত হয়েছে।’
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সমালোচনা করে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাবান মাহমুদ বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতারের কথা বলে সেই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছিলেন। এখনও এই হত্যাকাণ্ডের কোনও বিচার হয়নি। বিচারের দাবিতে আমরা সবসময় আন্দোলনের সঙ্গে থাকবো।’
জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, ‘সে সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিকে খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনা হবে। কিন্তু ৫ বছর পার হলেও কোনও বিচার হয়নি। তাদের মা বিচারের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। বারবার তদন্তের জন্য র্যা ব সময় নিলেও প্রকৃত তথ্য দিতে পারেনি। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের এমন কোন মহল জড়িত আছে যার কারণে বিচার হচ্ছে না? আগেও সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন হতো। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পরেও সেই নির্যাতন থামেনি। সাংবাদিকরা কোনও কথা বলতে পারেন না। সত্য কথা বলতে গেলেই মামলা, হামলা, নির্যাতনের শিকার হতে হয়।’
ডিআরইউ এর দফতর সম্পাদক নয়ন মুরাদ বলেন, ‘দেশের এমন গুরুত্বপূর্ণ হত্যা মামলার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিছুই জানেন না। তবে কি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড মামলা আপনারা ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রেখেছেন? নাকি এই মামলা নিয়ে কোনও নাড়াচাড়া করছেন না।’
সাংবাদিক নেতা কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া রাষ্ট্রের জন্য লজ্জার। এ লজ্জা সরকারের, এ লজ্জা আমাদের। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে কি?’
প্রতিবাদ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নেতা শেখ জামাল, ডিআরইউ এর কার্যনির্বাহী সদস্য নুরুল ইসলাম হাসিব, সাংগঠনিক সম্পাদক জিলানী মিল্টন, সহ সভাপতি আবু দারদা জুবায়ের, অর্থ সম্পাদক মানিক মুন্তাসির, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার আলম, নাসিমুন মিনু, কুদ্দুস আফ্রাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক শাহীন আসাদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব অমিয় ঘটক পুলক, ডিআরইউ এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ প্রমুখ।
ডিআরইউ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশার সভাপতিত্বে সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মোরসালিন নোমানী। এসময় উপস্থিত ছিল সাগর-রুনির একমাত্র সন্তান মেঘ।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply