কুয়াকাটা থেকে ফেরার পথে ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার শিমুলতলা বাজার নামক এলাকায় বরিশাল ল’ কলেজের পিকনিক বাস থামিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে একদল সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে। এসময় নলছিটি থানা পুলিশের এসআই নাসির উপস্থিত থাকলেও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে তেমন কোন ভূমিকা রাখেননি বলে জানান হামলার শিকার শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় বরিশাল ল’ কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।
সূত্র জানায়, শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে বরিশাল থেকে পিকনিকে কুয়াকাটা যায় বরিশার ল’ কলেজের প্রায় ২ শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। কুয়াকাটা থেকে ফেরার পথে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা বাসে গান চালিয়ে আনন্দ করছিলেন। এসময় হঠাৎ বাস ব্রেক করায় বেল্লাল নামের এক ছাত্রের অপর এক ছাত্র সাইফুলের গায়ের সাথে ধাক্কা লাগে। এসময় সাইফুল গায় ধাক্কা লাগার অপরাধে বেল্লালকে এলোপাথাড়ি লাথি ও থাপ্পর মারতে থাকে। পরে বাসে থাকা শিক্ষক ও অপর শিক্ষার্থীরা উভয়কে থামিয়ে দেয়। পরক্ষণে সাইফুল বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিতে থাকে বেল্লালকে। সাইফুলের বাড়ি নলছিটি উপজেলায় হওয়ায় বাস লেবুখালী ফেরিঘাট পৌছালে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের ফোন দিতে থাকেন।
এসময় ওই বাসে উপস্থিত বরিশাল ল’ করেজের শিক্ষক তোহিদুল ইসলাম রিগান ও আশ্রাফুল আলম সাইফুলকে এ বিষয়টি নিয়ে পথে ঝামেলা না করার জন্য অনুরোধ রেখে বলেন- তোমরা শান্ত হও আগামীকাল কলেজে বসে দোষ-গুণ দেখে ব্যবস্থা নিবো। স্যারদের এ কথায় ক্ষিপ্ত হয়ে সাইফুল বাস থেকে নেমে মোটরসাইকেলযোগে নলছিটি উপজেলার শিমুলতলা নামক স্থানে ১০ থেকে ১৫ জন স্থানীয় সন্ত্রাসী নিয়ে রাস্তার ওপরে দাড়িয়ে থাকে। লেবুকালী ফেরি পার হয়ে ল’কলেজ শিক্ষার্থীদের ওই বাসটি শিমুলতলা বাজারে পৌছানো মাত্রই বাসটি থামিয়ে সাইফুলসহ সন্ত্রাসীরা বেল্লালকে খুঁজতে থাকে। এসময় নলছিটি থানা পুলিশের এসআই নাসির উপস্থিত হন। কিন্তু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা বা আটকের মত কোন ভূমিকা রাখেননি তিনি। বাসে থাকা অপরাপর শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা সন্ত্রাসীদের বাধা দিলে তাদের ওপর পুলিশের সামনেই হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। হামলার ঘটনার ভিডিও ধারণ করার অপরাধে ৩ শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় ওই সন্ত্রাসীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থালে উপস্থিত এসআই নাসিরের কাছে সহযোগিতা চাইলে তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন- আমি কি আপনাদের চাকুরি করতে এসেছি, আমি আপনাদের চাকুরি করি না। উপায়ান্তু না পেয়ে বাসে থাকা অপর এক শিক্ষার্থী নলছিটি থানার অফিসার ইনচার্জ শাখাওয়াত হোসেনকে ফোন করে এসআই নাসিরের ভূমিকার বিষয়ে অবহিত করেন। পরে ওসি এসআই নাসিরকে ফোন করে ওই সন্ত্রাসীদের পিটিয়ে সরিয়ে দিতে বললেও ফোন রাখার পরে উল্টো শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থীদের লঞ্ছিত করেন নাসির। পরে স্থানীয়রা উপস্থিত হয়ে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা করে শিক্ষার্থীদের বাসে উঠিয়ে বরিশালের উদ্দেশে পাঠিয়ে দেন। তাৎক্ষনিক হামলা কারীদের নাম জানাযায়নি বলে জানান শিক্ষার্এথীরা।
এ বিষয়ে বরিশাল জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বরিশার ল’ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যাক্ষ ইকবাল আখতারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন- বিষয়টি খুবই দুখজনক। সামান্য একটি বিষয় নিয়ে শিক্ষকরা উপস্থিত থাকাকালীন বাস আটকিয়ে এমন ঘটনা মেনে নেয়ার মত নয়। তিনি আরও বলেন এ ঘটনায় ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হচ্ছে। পাশাপাশি ওই ছাত্রের ছাত্রত্ব বাতিল করাসহ তার শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিতেরও আশ্বাস দেন তিনি।’
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply