রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ১২:৩১

শিরোনাম :
প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ বরিশাল সদরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাদিস মীরের মনোনয়ন দাখিল বরিশালে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস জনজীবন,বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ! বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এসএম জাকির হোসেনের মনোনয়নপত্র দাখিল

বহিরাগতদের স্বর্গরাজ্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল!

dynamic-sidebar

* থামছে না ঔষধ ও পথ্য চুরি

* ওটি ডাক্তারদের সহযোগীতার অভিযোগ

* ব্যাবস্থা নেওয়ার আশ্বাস প্রশাসনের

আরিফ হোসেন :: দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের উন্নত চিকিৎসার এক মাত্র ভরসা বরিশাল শের-ই- বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে গত বছর ২২৬ জন নতুন জনবল নিয়োগ দিলেও এখনও প্রত্যাশিত সেবা পাচ্ছেন না আগত রোগীরা। বরং নিত্য নতুন দুর্নীতি ও অনিয়মে পত্রিকায় শিরোনাম হচ্ছে এই হাসপাতালটি। একের পর এক অনিয়মতান্ত্রীক ঘটনায় মানুষ আস্থা হারাচ্ছে এই চিকিৎসা কেন্দ্রটির উপর। চিকিৎসকদের অবহেলা, কর্মচারীদের স্বেচ্ছাচারিতা,ঔষুধ ও খাবার চুরি এখন নিত্যনৈমন্ত্রিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।

এব্যাপারে ভুক্তভোগী রোগী ও তাদের স্বজনরা অভিযোগ জানালেও আজ পর্যন্ত কোন অভিযোগেরই প্রতিকার পায়নি কেউ। সরকারের তরফ থেকে পর্যাপ্ত ঔষুধ সরবারাহ থাকলেও তা জুটছেনা রোগীদের কপালে। উপরন্ত চোরাই ঔষুধের বদৌলতে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে কতিপয় কর্মচারী ও শেবাচিমের সামনের এক শ্রেনীর ঔষুধ ব্যাবসায়ীরা। অভিযোগ রয়েছে অপারেশন থিয়েটার থেকে এক শ্রেনীর অসাধু ডাক্তারদের সহযোগীতায় ব্রাদারদের মাধ্যমে বিপুল পরিমান ঔষুধ পাচার হচ্ছে বাহিরে। বিশেষ করে ৫ম তলার সার্জারী ওটির ব্রাদার ইমাম হোসেন,অর্থপেডিক্স ওটির এম.এল.এস.এস মোজাম্মেল মল্লিক ,বহিরাগত সুমন রয়েছে ঔষুধ চুরির র্শীষে। এছাড়াও বেশ কিছু চিকিৎসকও রয়েছে এদের সহযোগী হিসেবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রোগীর এক স্বজন বলেন, অপারেশন থিয়েটারে যে ঔষুধ নেওয়া হয় তার সিংহভাগই থিয়েটারের মধ্যথেকে গায়েব করে দেয় ব্রাদাররা। আর একর্মগুলো ওটিতে থাকা ডাক্তারদের সহযোগীতা ছাড়া কোন ভাবেই সম্ভব নয়। একটি সূত্র জানায়,অপারেশনের রোগীদের জন্য বর্তমানে প্রায় সমস্ত ঔষধ সরকার থেকে সরবরাহ করা হলেও ছোট খাটো অপারেশনের জন্য রোগীর স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয় লম্বা এক স্লীপ।

গত সপ্তাহে হাসপাতালে রোগীদের ঔষুধ ও খাবার চুরি করে নিয়ে যাবার সময় দুই কর্মচারীকে হাতেনাতে আটক করেছে হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মী ও পুলিশ। দুপুর ২ টার দিকে হাসপাতালে প্রধান ফটকের সিড়ির নিচ থেকে কর্মচারী বহিরাগত সালমা ও বাহাদুরকে আটক করা হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানাযায়, হাসপাতালে লোকবল সঙ্কটের নামে চিকিৎসকরা অনিয়মকেই নিয়মে পরিণত করে ফেলেছে। দীর্ঘদিন ধরে এই অনিয়মকে প্রশ্রয় দিতে গিয়ে প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রকে খেসারত দিতে হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আটক এই দুই ব্যাক্তি হাসপাতালের কেউ না হলেও এরা নিয়মিতই ডাক্তারদের ‘বিশেষ কর্মচারি’ হিসাবে কাজ করতো। ডাক্তাররা ছোটখাটো কাজ এদের দিয়েই করাতেন। এর বিনিময়ে তারা ডাক্তারদের মাধ্যমে হাসপাতাল থেকে নানা সুযোগ-সুবিধা নিতো। এদের বড় একটি চক্র গড়ে উঠেছে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের মধ্যে। এটি সবার চোখের সামনেই হচ্ছিল প্রতিদিনই। ডাক্তারদের কাছ থেকে রোগীদের ওষুধের স্লীপ বিভিন্ন ধরনের ওষুধ লিখে বাহির থেকে কিনে আনতে বলতেন বাহাদুর। রোগীর স্বজনরা ওষুধ বাহির থেকে কিনে দিলেও তা রোগীর শরীলে ব্যাবহার করা হতো না। প্রতিদিনই হাজার হাজার টাকার ওষুধ ও খাবার বাইরে বিক্রি করতেন এই চক্রটি। চক্রে দুই সদস্য আটক হলেও মূল হোতারা এখন ধরাছোয়ার বাহিয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন একটি সূত্র।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন,হাসপাতালের ৫ম তলায় সার্জারী অপারেশন থিয়েটারে ডাক্তারদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে গড়ে ওঠা এই চক্রটি সম্পর্কে সবাই অবহিত হলেও কেউ এতে গা-করছে না। ভাবখানা এমন যে ‘সরকারি মাল দারিয়া মে ঢাল’। সূত্র আরো জানাযায়, ৫তলা থেকে প্রথমে সিড়ি দিয়ে একটি বাজারের ব্যাগ নিয়ে নামতে থাকেন চিকিৎসকদের দালাল বাহাদুর। ব্যাগটি দেখে নিরাপত্তাকর্মীদের সন্দেহজনক হওয়ায় কর্তব্যরত কর্মচারীরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একপর্যায়ে বাহাদুর নামের ওই সন্দেহভাজন ব্যক্তির ব্যাগ তল্লাশি করে তার ব্যাগে হাসপাতালের বিপুল পরিমাণ ওষুধ পাওয়া যায়।

জিজ্ঞাসাবাদে বাহাদুর বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে ওষুধগুলো দিয়েছেন বাইরে নিয়ে বিক্রির জন্য। তবে কোন চিকিৎসকরা দিয়েছে তা জানতে চাইলে কিছুই বলতে পারেনি বাহাদুর। তার কিছুক্ষন পরেই সালমা নামে এক বৃদ্ধমহিলা হাতে করে দু’টি বাজারে ব্যাগ নিয়ে সিড়ি থেকে নেমে যাওয়ার সময় তাকেও সন্দেহভাজন হলে ডেকে ব্যাগ তল্লাশি করে দেখতে পান হাসপাতাল থেকে রোগীদের দেওয়ার জন্য ডিম,মাংস,মাছ,ডাল,আলুসহ অনেক কিছু খাবার। পরে তাকেও নাতে নাতে আটক করে মেডিকেলে দায়ত্বে থাকা এসআই নাজমুলে সহযোগীতায় বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের কাছে তুলে দেন। তবে মাত্র এক দিন পরেই অদৃশ্য হাতের ইশারায় মুক্তি পায় তারা। হাসপাতালে কর্মচারী শাকিল বলেন,শুধু এই দুই ব্যাক্তিই নয়। হাসপাতালে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে শুরু করে ৫ তলায় অপারেশন থিয়েটারে রয়েছে বহিরাগত দালালের ছড়াছড়ি। এগুলো হাসপাতল কতৃপক্ষ দেখে না বান করে রয়েছে।

এব্যাপারে হাসপাতালে পরিচালক ডাঃ বাকিব হোসেন বলেন, ঘটনাটি শোনার পরই তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এরা কেউ আমাদের হাসপাতালের কর্মচারী নয়। পাঠক, শেবাচিমে অবস্থানরত বহিরাগতদের নিয়ে আগামীতে আসছে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। আমাদের সাথে থাকুন….

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net