বরিশালের উজিরপুরের ধামুড়া বাজারে সন্ধ্যা নদী দখল করে গড়ে উঠছে একের পর এক ভবন। প্রভাবশালী একটি মহলের যোগসাজশে এসব ভবন গড়ে উঠলেও কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছে স্থানীয়রা। এরই মধ্যে সন্ধ্যা নদীর প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা দখল করে দোকান, বসতঘরসহ দালান নির্মাণ করেছে প্রভাবশালী মহলটি।
সরেজমিন দেখা গেছে, গৌরনদী-ধামুড়া-মিরেরহাটের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সন্ধ্যা নদী। এর মধ্যে উজিরপুরের ধামুড়া পয়েন্টে নদীর জমি দখল করে অন্তত ২৫টি স্থাপনা গড়ে উঠেছে। আরো কয়েকটি ভবন গড়ে তোলার প্রস্তুতি চলছে। কয়েক বছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ধামুড়া এলাকায় ভাঙন রোধে নদীতে ব্লক ফেলে। কিন্তু প্রভাবশালী মহলটি তীরের ব্লক উপড়ে ফেলে নদীর জমি দখল অব্যাহত রেখেছে।
শোলক ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য পূর্ব ধামুড়া গ্রামের মন্নান ফকির তার দোকানের পেছনে নদীর কয়েক শতাংশ জমি দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন। ভবন নির্মাণের জন্য তিনি ভাঙন রোধে বসানো ব্লক উপড়ে ফেলেন। পাশেই ছত্তার খন্দকারের ছেলে মানিক খন্দকার একই কায়দায় নদী দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন। আগৈলঝাড়া উপজেলা বিআরডিবিতে কর্মরত এইচএম নাসির উদ্দিন নিজের দোকানের সঙ্গে নদীর জমি দখল করে বাসভবন নির্মাণ করেছেন।
এছাড়া দখলদারদের মধ্যে রয়েছেন কাংশি গ্রামের জাকির হোসেন, পৃর্ব ধামুড়া গ্রামের রহিম হাওলাদারের দোকানঘর, জাহাঙ্গীর বেপারী, রুনু বর্নিক, বাবুল সিকদার, পলাশ কুণ্ড ও অশোক সাহা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক বছরের ব্যবধানে উজিরপুরের ধামুড়া বাজারের আশপাশের জমির দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। এজন্য স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল নিজের জমির সঙ্গে নদীর জমিও দখল করে ভবন নির্মাণ করছে। দখল রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া না গেলে শিগগিরই পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে অস্তিত্ব হারাতে পারে সন্ধ্যা নদী।
অভিযুক্ত মন্নান ফকির বলেন, ডিসির পিয়ন থেকে শুরু করে সার্ভেয়ারসহ সবাইকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে বিল্ডিং নির্মাণ করেছি। অন্যদের বিল্ডিং উচ্ছেদের পর যেন আমারটা উচ্ছেদে আসে।
উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আক্তার বলেছেন, আপনার মাধ্যমে নদী দখলের বিষয়টি শুনলাম। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দ্রুতই কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উজিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ সিকদার বাচ্চু বলেন, সরকার নদী দখল রোধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। প্রশাসনের সহযোগিতায় সন্ধ্যা নদীর জমি দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ ভবন ও স্থাপনা দ্রুতই অপসারণ করা হবে।
এ বিষয়ে বরিশালের জেলা প্রশাসক এফএম ওজিয়ার রহমান বলেন, সন্ধ্যা নদী দখলের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হবে। তাছাড়া শিগগিরই নদী দখল করে গড়ে ওঠা স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply