শনিবার, ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৮:৫৬

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ
সন্তানের জন্য ৪৪ বছর ধরে প্রতিদিন রোজা রাখেন মা

সন্তানের জন্য ৪৪ বছর ধরে প্রতিদিন রোজা রাখেন মা

dynamic-sidebar

অনলাইন ডেস্ক :: সন্তানের জন্য মায়ের ভালোবাসা অনন্তকালের। সন্তানের কাছে মায়ের কোল পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়। সন্তান যত বড়ই হোক না কেন মায়ের কাছে শিশুই থাকে। মা আর সন্তানের সম্পর্ক চিরন্তন। মায়ের অকৃত্রিম ভালোবাসা ও স্নেহের সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা হয় না।

পৃথিবীতে সন্তানের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন একমাত্র মা। এবারও সন্তানের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে গিয়ে ৪৫ বছর ধরে ১২ মাস রোজা পালন করছেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাসিন্দা ভেজিরন নেছা নামে এক মা। হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে ফিরে পেয়ে মহান সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টির জন্য ৪৫ বছর ধরে ১২ মাস রোজা পালন করছেন এই মমতাময়ী।

সন্তানের জন্য ভালোবাসার এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাজারগোপালপুর গ্রামের মৃত আবুল খায়েরের স্ত্রী ভেজিরন নেছা। তিনি মৃত্যু পর্যন্ত লাগাতার সন্তানের জন্য রোজা পালন করবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছেন। আর সেটি পালন করে চলছেন গত ৪৫ বছর ধরে।

কিন্তু বয়সের ভারে দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন মতাময়ী এই মা। অসুস্থ শরীর নিয়েও প্রতিদিন রোজা রাখছেন তিনি। লাগাতার রোজা রাখতে কষ্ট হয় না বলতেই হাসিতে জবাব দিলেন ভেজিরন নেছা। বললেন, সন্তানের জন্য রোজা রাখি, তা আবার কষ্ট কিসের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৭৫ সালে ভেজিরন নেছার বড় ছেলে শহিদুল ইসলাম ১১ বছর বয়সে হারিয়ে যান। দীর্ঘদিন সন্তানকে খুঁজে না পেয়ে পাগলপ্রায় অবস্থা মায়ের। একপর্যায়ে মনস্থির করে গ্রামের মসজিদ ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা করেন ছেলে ফিরে এলে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মৃত্যু পর্যন্ত ১২ মাস রোজা রাখবেন ভেজিরন নেছা।

প্রতিজ্ঞার দেড় মাস পরই হঠাৎ একদিন তার হারিয়ে যাওয়া সন্তান বাড়িতে ফিরে আসে। দরজায় এসে তাকে ‘মা’ বলে ডাক দেয়। বুকের হারানো মানিককে বুকে ফিরে পেয়ে খুশিতে কেঁদে ফেলেন এই মা। এরপর থেকে সন্তানের জন্য রোজা রাখা শুরু করেন এই মতাময়ী। গত ৪৪ বছর ধরে প্রতিদিন রোজা রাখছেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৃদ্ধা ভেজিরন নেছা বলেন, আল্লাহ আমার ছেলেকে আমার কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তারপর থেকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রোজা রাখি।

যে ছেলের জন্য ১২ মাস (৫ দিন ব্যতীত) রোজা রাখেন মা সেই বড় ছেলে শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার জন্য মা কষ্ট করে রোজা রাখেন। আমি রোজা রাখতে নিষেধ করলেও তিনি শোনেন না। অসুখ-বিসুখ হলেও তিনি রোজা ভাঙেন না। আমার মায়ের মতো মা পৃথিবীতে আর কেউ নেই। আমি বাড়িতে ফিরে আসার পর থেকে গত ৪৪ বছরে একটি রোজাও ভাঙেননি মা। আমার মা এও বলেন, মৃত্যু পর্যন্ত লাগাতার রোজা রাখবেন।

ভেজিরন নেছার প্রতিবেশী মঞ্জুর ঢালী বলেন, অনেক মাকে দেখেছি কিন্তু ভেজিরন নেছার মতো এমন মা দেখিনি। যিনি সন্তানের কথা চিন্তা করে সারা জীবন রোজা রাখছেন। অভাব-অনটনে জীবন কাটলেও একটিও রোজাও ভাঙেননি ভেজিরন। যত কষ্টই হোক না কেন তিনি রোজা রাখেন। শুধু সন্তানকে ফিরে পেয়েছেন বলেই প্রতিজ্ঞা রক্ষার্থে মৃত্যু পর্যন্ত রোজা রেখে যাবেন ভেজিরন নেছা। এ এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

এ ব্যাপারে মধুহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুয়েল আহমেদ বলেন, ভেজিরন নেছার জন্য বেশি কিছু করতে পারিনি। তবে যতটুকু সুযোগ ছিল তার জন্য বয়স্কভাতার একটি কার্ড করে দিয়েছি। ভবিষ্যতে কোনো সহযোগিতার সুযোগ এলে তাকে সহযোগিতা করা হবে।

৭৫ বছর বয়সী ভেজিরন নেছার তিন ছেলে এবং তিন মেয়ে। এদের মধ্যে শহিদুল ইসলাম সবার বড়। এখন তার বয়স ৫৫ বছর। জটিল এবং কঠিন রোগের কারণে বিছানায় পড়ে আছেন তিনি। তারপরও প্রথম রোজা রেখেছিলেন তিনি। অসুস্থতার জন্য আর রোজা রাখতে পারছেন না তিনি। মাঝেমধ্যে সুস্থ হলে রোজা রাখছেন।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net