ভোলায় ওবায়েদুল হক মাহাবিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে কাজী অফিসে জোর করে বিয়ে করা এবং সাত দিন পর তালাক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মনির নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। এখন বিচার চাইতে গেলে ওই ছাত্রীকে মাটিতে পুতে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবার। এদিকে এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের নুরুল আসলাম এর বখাটে ছেলে মনির। এমন অভিযোগ এনে সম্প্রতি ভোলা প্রেসক্লাবে কলেজছাত্রী এক সংবাদ সম্মেলন করেন। বিষয়টি ভোলা জেলা প্রশাসক অবগত হয়ে কাজির বিরুদ্ধে তদন্ত করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ প্রদান করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: কামাল হোসেন ঘটনা তদন্ত করে কাবিন নামায় বয়স বাড়িয়ে দিয়ে বাল্য বিয়ে সম্পন্ন করার অপরাধে কাজি মোঃ শফিকুল ইসলাম ও তার সহকারী মাহাবুব হাসানকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। এবং ভোলা সদর থানায় যথাযথ মামালা নেয়ার মাধ্যমে বিচারের জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করানো ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন।
ভুক্তভোগী পরিবার জানান, এ বছরের মার্চ মাসের ৯ তারিখে কলেজ থেকে ফেরার পথে ওই ছাত্রীকে মনিরসহ কয়েক জন বখাটে অস্ত্রের মুখে গাড়িতে তুলে বকুল তলা মসজিদরে পাশের কাজি অফিসে নিয়ে যায়। কাজি এবিএম শফিকুল ইসলামের মাধ্যমে কলেজছাত্রীর ১৮ বছর বয়স না হওয়ার পরও পরিবার ছাড়াই জোর করে বিয়ে পড়ান তারা। পরে আবার সেই কাজির মাধ্যমে তাকে সাত দিনের মাথায় তালাক পত্র নেয়ার জন্য হুমকি দেয়া হয়।
পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে মনির এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়।
এমন অভিযোগের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশের পর নিয়মিত মামলা দেয়ার জন্য সদর থানায় আসেন এবং মামলা করেন। তবে কলেজছাত্রীর আনিত অভিযোগ আমলে না নিয়ে মনগড়া মামলা লিখে নেন ভোলা থানা। মামলার তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে ম্যানেজ হয়ে যাওয়ার অভিযোগও তোলে ওই পরিবার। বলেন আসামি এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরলেও তিনি ধরেননি। আমরা গরিব হওয়ায় পুলিশকে খরচের টাকা দিতে না পারায় বিচার পাচ্ছি না। ফলে লম্পট মনিরের জন্য কলেজছাত্রীর বাসা একই এলাকায় হওয়ায় তাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এমন পরিস্থিতিতে শনিবার ওই কলেজছাত্রী তার স্বজনদের নিয়ে পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ তুলে ধরে বিচার দাবি করেন। এর আগে ওসিকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার মোঃ মোকতার হোসেন। তবুও আমলে নেননি মামলার তদন্তকারী এসআই। অথচ ওই ঘটনায় এসআই হাসান সাদামাটা ধারা দিয়ে মামলা সাজিয়ে কৌশলে অভিযোগকারী হিসেবে কলেজছাত্রীর সাক্ষর নেন। মামলার কপিও দেননি ওই পরিবারকে। ফলে গত বৃহস্পতিবার আসাই মনির, কাজী শফিকুল ইসলাম ও তার সহযোগী অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল আদালত ভোলা সদর কোর্ট থেকে জামিনে বের হয়ে যান। ফলে শনিবার ফের ভোলা প্রেসক্লাবে এসে ওই কলেজছাত্রী জীবননাশের ভয়ে বাসায় থাকতে পারছেন না এমন অভিযোগ তুলে ধরেন এবং আইনের মাধ্যমে ন্যায বিচারের দাবি জানান।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply