বাপ্পী মজুমদারঃ সাংবাদিকদের হাঁটাচলা, কথাবার্তা, আচার-আচরন, সর্বোপরি স্টাইল, সব কিছু আকৃষ্ট করতো তাকে। ভাল লাগা থেকে শখের বশে সাংবাদিকতায় আগমন তার। আজ সে বরিশাল সাংবাদিক অঙ্গনের একটি উজ্জল নক্ষত্র। এই নগরীর সর্বাঙ্গনে নীতিনিষ্ট পরিচিত সেই কাওছার হোসেন বয়সে তরুন হলেও পেশাগত ক্ষেত্রে আপাদমস্তক সাংবাদিক। খুব স্বল্প সময়ে নিজেকে পরিনত করতে পেরেছে সৎ ব্যক্তিত্বে। একারনেই মাঝে মধ্যে রোষানলের শিকার হয় কোন কোন সুবিধাভূগী সহকর্মীদের। সাংবাদিক কাওছার হোসেন পিছু হটে না সত্যকে সত্য- মিথ্যাকে মিথ্যা বলতে। আর ক্ষুরধার লেখনীতে দৃশ্যমান হয় সমাজের সঙ্গতি-অসঙ্গতি উভয়ই। তাই নির্ভিক সাংবাদিক কাওছার হোসেনকে দমাতে সমাজে অসঙ্গতির সাথে জড়িতরা আশ্রয় নেয় মিথ্যা মামলা দায়েরের মত হীন কাজে। আবার কাওছারের লেখনীতে উপকারভোগীরা সৃষ্টিকর্তার কাছে দু’হাত তুলে দোয়া চায় তার জন্য। আবার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে কোন সাংবাদিকের স্বার্থে আঘাত হানায় মিথ্যা হয়রানীমূলক নিউজ করাতে এবং কালিমা লেপনে কুন্ঠবোধ করেনি কাওছারের বিরুদ্ধে।
এক সময়ের ক্রিকেটার কাওছার হোসেনের সাংবাদিকতায় প্রবেশ প্রায় এক দশক পূর্বে সাংবাদিক তাওহীদ সৌরভের হাত ধরে। স্থানীয় মতবাদ পত্রিকার মাধ্যমে তার সাংবাদিকতায় হাতে খড়ি। ছাত্রজীবনে আগমন ঘটে এই অঙ্গনে। তখন দেশ এক নৈরাজ্যকর-বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে। এই পরিস্থিতি থেকে জাতিকে মুক্ত করতে জন্ম হয় ওয়ান ইলেভেন এর। সদা সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করতে হত কর্মস্থলে। তার ছিল পেশাগত প্রতিযোগিতা। এই নগরীতে একটি প্রথা চালু আছে। সহসা কোন অগ্রজ কোন অনুজকে জায়গা ছেড়ে দেয় না। অথবা কেউ নিজ যোগ্যতায় অগ্রায়মান হতে চাইলে তাকে আড়াল থেকে টেনে ধরা। এসবকে উপেক্ষা করে কাওছার হোসেন ধাবমান সাংবাদিকতায়।
সাংস্কৃতিক মনা, চারুকলা বরিশালের সদস্য, সাংবাদিক কাওছার হোসেনের বাবার নাম ইউনুছ খান। মাতা সরভানু বেগম। দুই ভাই বোনের মধ্যে সে জেষ্ঠ্য। মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেয়া কাওছার হোসেন পেশাগত কাজে অদম্য। কোন হুমকি-ভয় পরোয়া করে না সে। সব বিটে কাজ করতে হয় সাংবাদিকতার সুবাদে। কিন্তু কোন কিছুর বিনিময়ে নিউজ কিল করা অথবা কোন কিছুর বিনিময়ে অহেতুক কারো বিরুদ্ধে নিউজ করা কিংবা সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা স্বার্থ পরিপন্থী কোন কাজের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগ নেই তার বিরুদ্ধে।
এই অল্প সময়ের মধ্যেই কাওছার হোসেন বেশ কয়েকটি খ্যতিমান মিডিয়ায় কাজ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে স্থানীয় দৈনিক দক্ষিনাঞ্চল, জাতীয় অনলাইন পত্রিকা বাংলা নিউজ, বিডিনিউজ ও সময় টেলিভিশনে। বর্তমানে কর্মরত আছেন যমুনা টেলিভিশনের বরিশাল ব্যুরো প্রধান হিসেবে। এরই মধ্যে তিনি সদস্য পদ পেয়েছেন বরিশাল প্রেস ক্লাব, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি ও বরিশাল টেলিভিশন মিডিয়া এ্যাসোসিয়েশনে। দায়িত্ব পালন করছেন সরকারি বিএম কলেজ জার্নালিষ্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে।
সরকারি বরিশাল কলেজ থেকে এইচএসসি এবং সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ থেকে ব্যবস্থাপনায় অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করা সাংবাদিক কাওছার হোসেন স্পষ্টভাষী। কেউ কেউ তাকে বদমেজাজী বলেন, কারো মতে সাংবাদিক সুলভ ব্যবহার নেই তার মধ্যে। তবে কাওছার বিনা কারনে কারো উপর চড়াও হয়েছে, তার উদাহরন মেলেনি। অনেকে বলে, আমাদের সাংবাদিক কাওছার খুবই কৃপন। এক কাপ চাও কিনে খায় না। এর সত্যতা আমি পাইনি। বরঞ্চ যা প্রত্যক্ষ করেছি, বিপদগ্রস্থ অসহায় সাধারন মানুষের পাশে দাড়িয়েছে যতটুকু সমর্থ আছে তা নিয়ে উদার হস্তে নিভৃতে। কাওছারকে যারা পছন্দ করে না, তারাও পিছনে তার সততা নিয়ে আলোচনা করেন। তবে এক কথায় কেউ স্বীকার করুক বা নাই করুক অপ্রিয় হলেও সত্য, মাঠ পর্যায়ে সাংবাদিকতার পথিকৃৎ ও প্রথিত যশা সাংবাদিক শওকত মিল্টন বরিশাল ত্যাগ করার পর এখন পর্যন্ত সাহসী রিপোটিং প্রকাশ পাচ্ছে একমাত্র কাওছার হোসেনের হাত থেকে। সুবিধা বঞ্চিত মানুষের বাস্তব চিত্র, অপরাধ, জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি, নগর জীবন প্রভৃতি খবর ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে নগরবাসীর মধ্যে।
প্রতিবন্ধক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পথচলা সাংবাদিক কাওছার হোসেন মনে করেন, বর্তমান সাংবাদিকতা খুবই খারাপ সময় পাড় করছে। বিশেষ করে অনলাইন সাংবাদিকতা। এখানে কোন নীতিমালার বালাই নেই। যে যার মত, যার তার বিরুদ্ধে নিউজ করে দেয়। কতিপয় মানুষ ব্যক্তি শত্রুতা উদ্ধার, হয়রানী ও মানুষ জিম্মি করে সহজে আয়ের মাধ্যম হিসেবে অনলাইনকে ব্যবহার করা হচ্ছে। যা কাম্য নয় বলে কাওছারের অভিব্যক্তি। এই অবস্থার অবসান ঘটাতে সম্পাদকদের কঠোর হতে হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্নদের স্থান দিতে হবে। যার তার হাতে কার্ড তুলে দেয়া চলবে না। কর্তৃপক্ষকে মনিটরিং করতে হবে ডেস্কের সকল সাংবাদিকদের। আর নিশ্চিত করতে হবে বেতন ভাতা। তা হলেই সংকটের উত্তোরন ঘটবে বলে মনে করেন সহকর্মী বান্ধব অদম্য তরুন সাংবাদিক কাওছার হোসেন।
নিউজ পাগল কাওছার খবরের স্থানে চষে বেড়ায় প্রান্ত থেকে প্রান্তে। যখনই কোন ইনফরমেশন পায় তাৎক্ষনিক ছুটে যায় ঘটনাস্থলে। নিউজের ক্ষুধাই যেন কাওছারকে সাংবাদিক কাওছার করে তুলেছে। আজ ২০ আগষ্ট কাওছারের জন্ম দিন। ১৯৮৮ সালের এই দিনে জন্ম গ্রহন করে সে। রেষারেষি কল্টকময় এই পরিবেশে বিচরন করতে গিয়ে কলম যেন স্থবির না হয় এবং পেশায় যেন বিচ্যুতি না ঘটে, জন্ম দিনে সেই প্রত্যাশা অসি যোদ্ধা কাওছার হোসেনের প্রতি।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply