বরগুনা প্রতিনিধি : বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির রিমান্ড চলছে। পাঁচ দিনের রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার মিন্নিকে আদালতে হাজির করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। পুলিশ জানায়, মিন্নি নিজের স্বামীর হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। আদালত তাকে কারাগারে নেওয়ার নির্দেশ দেয়।
শুক্রবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যায় মিন্নিকে যখন আদালত থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো তখন তার বাবা মোজ্জাম্মেল হোসেন সেখানে ছিলেন। তিনি চিৎকার করে বলছিলেন, তার মেয়ের কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।
মেয়েটি অসুস্থ দাবি করে এই বাবা আরও জানান, আগের দিন একজন পুলিশ সদস্য তাদের বাসায় গিয়ে মিন্নির ওষুধের প্রেসক্রিপশন নিয়ে আসেন।
মোজ্জাম্মেল হোসেন এসময় আরও বলতে থাকেন, ‘মেয়ে আমার জীবন বাজি রেখে তার স্বামীকে রক্ষা করতে গেছে। এটাই তার অপরাধ?’
বিজ্ঞাপন
সব কিছুর জন্য তিনি স্থানীয় সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে দায়ী করেন।
মোজাম্মেল বলেন, ‘এসবই শম্ভুবাবুর খেলা। তার ছেলে সুনাম দেবনাথকে সেভ করার জন্য আমাদের বলি দেওয়া হচ্ছে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিন্নিকে যখন আদালত থেকে বের করা হচ্ছিলেন, তখন তাকে পুলিশের দুজন নারী সদস্য ধরে ছিলেন। ছোট পিকআপে তোলার সময় মিন্নি কিছু একটা বলার জন্য উদ্যত হয়েছিলেন। কিন্তু পাশে থাকা নারী পুলিশ সদস্য এ সময় মিন্নির মুখ চেপে ধরেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির মিন্নিকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করলে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে মিন্নির স্বামী রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এসময় মিন্নি তার স্বামী বাঁচাতে চেষ্টা করছেন এমন একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তবে পরে আরও একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়, যাতে মিন্নির কিছু আচরণ অস্বাভাবিক মনে হয়। পরে অভিযোগ আনে রিফাত শরীফের পরিবার। তাদের দাবি মিন্নি নিজেই রিফাতের হত্যার সাথে সম্পৃক্ত। এ মর্মে মামলাও দায়ের হয়। যার ভিত্তিতে পুলিশ প্রথম জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিন্নিকে আটক করে। পরে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে এই মর্মে মিন্নিকে গ্রেফতার দেখায় ও আদালতে হাজির করে রিমান্ড চায়। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড দিলে, দ্বিতীয় দিনেই মিন্নিকে আদালতে নিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের পরের দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ ছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়। মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড গত ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। মামলার এজাহারভুক্ত ৬ আসামিসহ এ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মিন্নিসহ মোট ১০ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply