বৃহস্পতিবার, ১৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ভোর ৫:৪৬

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ
বাবুগঞ্জে স্বীকৃতির দাবিতে ৪৩ মুক্তিযোদ্ধার মানববন্ধন

বাবুগঞ্জে স্বীকৃতির দাবিতে ৪৩ মুক্তিযোদ্ধার মানববন্ধন

dynamic-sidebar

বরিশাল অফিসঃ


বাবুগঞ্জে স্বীকৃতির দাবিতে ৪৩ মুক্তিযোদ্ধার মানববন্ধন
দেশ মাতৃকারটানে নিজেদের জীবন বাঁজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে সংক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিজয় পতাকা ছিনিয়ে আনলেও জীবন যুদ্ধে পুরোপুরি পরাজিত জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি, রহমতপুর, কেদারপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ৪৩ মুক্তিযোদ্ধা।
নানা কারণে ওইসব বীর মুক্তিযোদ্ধারা অনলাইনে আবেদন করতে পারেননি। ফলে অনলাইনে আবেদনের সময়সীমা বৃদ্ধি করে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে তারা তালিকাভূক্ত হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোরদাবী জানিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে এগারোটায় মানববন্ধন ও সমাবেশ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালীন অনুষ্ঠিত সমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান মোল্লার সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা রশিদ তামিদার, মন্নান হাওলাদার, আবদুল আজিজ, হারুন তামিদার, আবুল হোসেন, চেরাগ আলী হাওলাদার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা ২৮০জন মুক্তিযোদ্ধা তৎকালীন বাবুগঞ্জ উপজেলার বেইজ কমান্ডার রত্তন আলী শরীফ বীর প্রতিক এর নেতৃত্বে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বীরত্বের ভূমিকা পালন করেন। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারী বেইজ কমান্ডার রত্তন আলী শরীফ বীর প্রতিক নিজ হাতে ২৮০ জন মুক্তিযোদ্ধার চূড়ান্ত তালিকা গঠণ করেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেন। বক্তারা অভিযোগ করেন, একটি কু-চক্রি মহলের যোগসাজসে ওই তালিকার দেহেরগতি, রহমতপুর, কেদারপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ৪৩ মুক্তিযোদ্ধা ব্যতিত অন্যসব মুক্তিযোদ্ধারা তালিকাভূক্ত হয়ে সরকারের দেয়া সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছেন। তালিকা না পাওয়ায় ৪৩ মুক্তিযোদ্ধা অদ্যবর্ধি তালিকাভূক্ত হতে পারেননি। দীর্ঘদিন পর গায়েব করা বেইজ কমান্ডার রত্তন আলী শরীফ বীর প্রতিকের নিজহস্তের তালিকাটি অতিসম্প্রতি উদ্ধার করা হয়। এরইমধ্যে অনলাইনের সময়সীমা না থাকায় ৪৩ মুক্তিযোদ্ধা আবেদন করতে না পেরে সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরে আবেদন করেও কোন সুফল পায়নি। ফলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হওয়া সত্বেও চলমান যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি ওই ৪৩ মুক্তিযোদ্ধা। উপায়অন্তুর না পেয়ে ওই ৪৩ বীর মুক্তিযোদ্ধা অনলাইনে আবেদনের সময়সীমা বৃদ্ধি করে সঠিক যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে তাদের তালিকাভূক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোরদাবী জানিয়ে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেন।
উপজেলার চৌকস নির্বাহী কর্মকর্তা দীপক কুমার রায় স্মারকলিপি প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বাবুগঞ্জ উপজেলায় মহান মুক্তিযুদ্ধের বেইজ কমান্ডার রত্তন আলী শরীফ বীর প্রতিকের নিজ হস্তের তালিকার অগ্রাধিকার দেয়া হয় বেশি। সেমতে বাদপরা ৪৩ মুক্তিযোদ্ধার তালিকাটি স্মারক নাম্বার দিয়ে জামুকাসহ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে। সেখান থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে সে অনুযায়ীই বাদপরা ৪৩ মুক্তিযোদ্ধার ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সূত্রমতে, একইভাবে কম্পিউটার অপারেটরের ভুলের কারণে অনলাইনে আবেদন করা সত্বেও জেলার বিভিন্ন উপজেলার অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার ডিজি নাম্বার আসেনি। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা সত্বেও এখনও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। যেকারণে চলমান যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হওয়া সত্বেও কেবলমাত্র ডিজি নাম্বার না আসার কারণে ওইসব মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারছেননা উপজেলা বাছাই কমিটি। ফলে চলমান যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া নিয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের চলমান যাচাই-বাছাইকে পুঁজি করে এক শ্রেনীর সুবিধাভোগীরা পূর্ব শত্রুতার জেরধরে যাচাই-বাছাইয়ের আওতায় থাকা প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে নামে বেনামে বিভিন্ন দপ্তরে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে আপত্তিকর লিখিত অভিযোগ দায়ের অব্যাহত রেখেছেন। ফলে চরম বিভ্রান্তিতে পরেছেন উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গত ১৫ দিনে যাচাই-বাছাইয়ের আওতায় থাকা প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা জেলার গৌরনদী উপজেলার সরিকল ইউনিয়নের আধুনা গ্রামের মৃত ধনু মোল্লার পুত্র আলী আকবর মোল্লা, একই ইউনিয়নের মৃত মজিদ শিকদারের পুত্র আনোয়ার হোসেন শিকদার, মৃত আজাহার মৃধার পুত্র জাহাঙ্গির মৃধা, হারুন-অর রশিদসহ ১১ মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণায়লসহ বিভিন্ন দপ্তরে ওই ইউনিয়নের এসএম শামসুল হকের পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা (গেজেট নং ৩৫০৬) এসএম শাহজাহানের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগ দায়ের করার ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম শাহজাহান জানান, তার নাম ও গেজেট নাম্বার ব্যবহার করে যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে সে ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেননা। একইভাবে নোয়াপাড়া গ্রামের মৃত ফরমান সরদারের পুত্র অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও প্রবীণ সমাজ সেবক মোঃ আদম আলী সরদারকে রাজাকার আখ্যায়িত করে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন জনৈক নাজিম উদ্দিন টিপু। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা সংক্রান্ত সকল প্রকার কাগজপত্র থাকা সত্বেও কেবলমাত্র পূর্ব শত্রুতার জেরধরে আদম আলী সরদার ও তার পরিবারকে হয়রানীর উদ্দেশ্যে টিপু এ অভিযোগ দায়ের করেন। একইভাবে হয়রানীর উদ্দেশ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা আক্কেল আলী বেপারীর বিরুদ্ধে এলাকায় পোস্টারিং করেছে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা। এনিয়ে চরম বিভ্রান্তিতে পরেছেন উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net