মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ১২:১২

শিরোনাম :
প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ বরিশাল সদরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাদিস মীরের মনোনয়ন দাখিল বরিশালে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস জনজীবন,বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ! বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এসএম জাকির হোসেনের মনোনয়নপত্র দাখিল
বরিশাল পাবলিক গণগ্রন্থাগারে অর্ধলক্ষাধিক বইয়ের বিপরীতে সদস্য সংখ্যা ৪৩

বরিশাল পাবলিক গণগ্রন্থাগারে অর্ধলক্ষাধিক বইয়ের বিপরীতে সদস্য সংখ্যা ৪৩

dynamic-sidebar

অতিথি প্রতিবেদক :অপার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দুর্দশায় ভুগছে বরিশালের বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার। অর্ধলক্ষাধিক বইয়ের সমাহার গ্রন্থাগারের তিন তলাজুড়ে থাকলেও পাঠকের সংখ্যা নিতান্তই কম, আর সদস্য সংখ্যা রয়েছে ৫০ জনেরও নিচে। এছাড়াও নানা সমস্যায় জর্জরিত এ গ্রন্থাগারটির পদচারণা ভালোভাবে শুরু হলেও প্রচারের অভাবে পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণে কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ বলে মনে করছেন অনেকেই।

তবে গ্রন্থাগার সংশ্লিষ্টদের দাবি গ্রন্থাগারে পাঠক না হওয়ার কারণ স্কুল-কলেজগুলোর প্রধানরা। তারা পাঠাগার সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের জানায় না। বিভিন্নভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের চিঠি প্রধান করা সত্ত্বেও এ সমস্যার নিরসন হচ্ছে না। পাশাপাশি অভিভাবকরা কোচিংমুখী হওয়ায় এ সমস্যা আরো দৃঢ় হচ্ছে। গ্রন্থাগারে এসে বই না পড়ায় শিশু-কিশোরদের বাইরের জগৎ থেকে পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষের।

এদিকে নতুন নতুন বইয়ের সমারোহে বরিশালের বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারে ৬৭ হাজার বই থাকলেও নিবন্ধিত পাঠক বা সদস্য সংখ্যা মাত্র ৪৩ জন। আর যে ৪৩ জন রয়েছেন তারাও নিয়মিত আসছেন না। ভবিষ্যতে তারাও থাকবেন কিনা তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। তবে এদের চাইতে অনিবন্ধিত সদস্য বা পাঠকের সংখ্যাই বেশি।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে এ গ্রন্থাগারের জন্য বিভিন্ন ধরনের দুই হাজার ৬০০ বই সংগ্রহ করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। যার ফলে বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারে বর্তমান বইয়ের সংখ্যা ৬৭ হাজার। যার মধ্যে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিষয় ছাড়াও কম্পিউটার, ইংরেজি, মুক্তিযুদ্ধ, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাসসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বই রয়েছে।

পাশাপাশি শিশুদেরই রয়েছে সাত হাজার বই। এসব বই পড়ার জন্য গড়ে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ পাঠক গ্রন্থাগারে আসেন। যার সংখ্যা মাসে দাঁড়ায় ১০ থেকে ১৫ হাজার, দাবি সংশ্লিষ্টদের। আর এসব পাঠকের মধ্যে তেমন কেউই নিবন্ধিত নন। তবে সরেজমিনে গিয়ে চারতলা বিশিষ্ট এ গ্রন্থাগারে গিয়ে তেমন পাঠকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি।

বই পড়তে আসা শিক্ষার্থীরা জানান, এখানে প্রায় আধুনিক সব ধরনের বই রয়েছে। পাশাপাশি পাঠকও আসেন যাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। তবে এখানে বসে বই পড়া যায় বলে কেউ বাসায় তা নিতে আগ্রহী নন।

অপরদিকে বিভাগীয় এ গণগ্রন্থাগারের জেনারেটর নষ্ট রয়েছে বহু বছর ধরে। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এসে প্রিন্সিপাল লাইব্রেরিয়ান কাম উপ-পরিচালক মিছবাহ্ উদ্দিন এটিকে নষ্ট হিসেবেই দেখতে পান। এরপর থেকে এটি মেরামত করার উদ্যোগ নেয়া হয়নি আজও। তাই বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ছাড়াই দিন রাত পাড় করছে গ্রন্থাগারটি।

যে কারণে অসহ্য গরমে পাঠকদের পড়তে হয় ভোগান্তিতে। এছাড়া গণগ্রন্থাগারের সঙ্গে বৈদ্যুতিক ধারণক্ষমতার ওপর চিন্তা রেখে বসানো হয়েছিল দামি একটি ট্রান্সফরমার। যেটিও নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে প্রায় চার বছর ধরে। পরবর্তী সময়ে লাইব্রেরি সচল রাখতে বিকল্প ব্যবস্থায় ট্রান্সফরমার ছাড়াই বৈদ্যুতিক লাইন ব্যবহার করতে হচ্ছে গণগ্রন্থাগারের।

পাশাপাশি পাঠকক্ষ কিংবা পাঠকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বুক সর্টার ও ক্যাটালগার পোস্টদুটিও শূন্য রয়েছে এ গ্রন্থাগারে। ফলে সময় লাগলেও পাঠকরা যে যেভাবে পাচ্ছেন কিংবা খুঁজে নিচ্ছেন নিজেদের বই। ক্যাটালগার না থাকায় ক্যাট্যালগ লকারগুলোও দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে অযত্নে অবহেলায়।

গণগ্রন্থাগারের বিভিন্ন সমস্যার বিষয় নিয়ে বরিশাল বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের প্রিন্সিপাল লাইব্রেরিয়ান কাম উপ-পরিচালক মিছবাহ্ উদ্দিন লেন, এখানে যে ধরনের জনবল প্রয়োজন তার অনেকটাই নেই। যেমন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় লাইব্রেরিয়ান পদটি শূন্য রয়েছে বহুদিন ধরে। এরপর ১৭টি পদের মধ্যে পাঁচটি শূন্য। তারপরও চেষ্টা করা হচ্ছে, বরিশালের প্রায় সকল-স্কুল কলেজেই লাইব্রেরিতে শিক্ষার্থীদের আসার জন্য চিঠি দিয়েছেন। তবে শিক্ষার্থী এলেও নিয়মিত সদস্য হতে চায় না কেউ। নিয়মিত সদস্য হলে ফেরতযোগ্য ৫০০ টাকার জামানত দিয়ে কার্ড করতে হয়। তাহলে বাসায় যেমন বই নেয়া যায়, তেমনি তা আবার ফেরত দিতে হয়। হারিয়ে গেলে জামানত থেকে কেটে নেয়া হয়। আর এতেই কারো আগ্রহ নেই।

পাঠকের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, লাইব্রেরিতে পাঠের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মনোভাব তৈরি করে দেয়া উচিত শিক্ষকদের। এত বড় লাইব্রেরি, এত বই বিনামূল্যে সরকার পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে, এগুলোর যথাযথ ব্যবহার পাঠকের পাঠের মধ্য দিয়েই হবে।

উপ-পরিচালক মিছবাহ্ উদ্দিন বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়ে বলেন, বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা না থাকায় বিদ্যুত গেলে ফ্যান চলে না লাইট জ্বলে না গ্রন্থাগারে। সবকিছুই বন্ধ হয়ে যায়। তবে ভবনের নকশার কারণে দিনের বেলা ঝড়-বৃষ্টি না হলে পাঠকক্ষে বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না। জেনারেটর সারানোর চেয়ে বড় কথা এটিকে পরিচালনা করা। সে রকম পদ বা লোক লাইব্রেরির নেই। তারপর জেনারেটরের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে।

এদিকে ট্রান্সফরমার তো নষ্ট রয়েছে চার বছর ধরে। এটির বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগকে বলা হলেও তারা কোনো মেরামতের পদক্ষেপ না নিয়ে সরাসরি পোস্ট থেকে লাইন টেনে দিয়েছেন। সেই থেকে একইভাবে চলছে গণগ্রন্থাগার।

তিনি আরো বলেন, লাইব্রেরিয়ান পদটির গুরুত্ব অনেক, তবে ক্যাটালগার ছাড়া লাইব্রেরি চলতে চলতে এখন অনেকটাই খাপ খেয়ে গেছে পাঠক। বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারে লাইব্রেরিয়ান নেই প্রায় দুই বছর হলো, আর ক্যাটালগার নেই ৫/৬ বছর।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net