আকতারুল ইসলাম আকাশ ॥ভোলা সদর উপজেলার কন্দ্রক পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (ন্যাশনাল সার্ভিস শিক্ষক) মোঃ মাসুম বিল্লাহ কোচিং না করায় চতুর্থ শ্রেণীর ৩৯ জন্য শিক্ষার্থীদেরকে নির্মমভাবে ব্যাতঘাত করে।
এতে কোমলমতি শিশুদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্তাক্ত হয়। আহত শিক্ষার্থীরা স্থানীয় পর্যায়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
এদিকে কোমলমতি শিশুদের উপর নির্মম নির্যাতনের কারণে বিদ্যালয়ের মাঠে ও জনতা বাজারে শিক্ষককের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে মিছিল করেন অভিভাবকরা।
শিক্ষার্থীদেরকে নির্যাতনের কথা শিকার করেছেন শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্ব) সকাল ১১টার দিকে ক্লাস চলাকালীন সময়ে এই ঘটনা ঘটে।
নির্যাতিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, ন্যাশনাল সার্ভিস সংস্থার নির্দেশে দুই বছর মেয়াদে কন্দ্রক পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অস্থায়ী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন তিনি।
মাস শেষে সংস্থা থেকে মাত্র চার হাজার টাকা বেতন পেয়ে থাকেন। এই সামান্য বেতন তার জন্য উপযুক্ত না হওয়ায় স্কুলের শিক্ষার্থীদেরকে প্রাইভেট ও কোচিং করান। প্রথম এক বছর শিক্ষার্থীরা নিয়মিত কোচিং করলেও জুন মাস থেকে কোচিং না করতে অপারগতা প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ কোচিং করতে একাধিকবার নির্দেশ দেন শিক্ষার্থীদেরকে। শিক্ষার্থীরা তার কথামতো কোচিং না করায় ক্ষুব্ধ হয়ে পড়া না পাড়ার কথা বলে নির্মমভাবে ব্যাতঘাত করে ৩৯ শিক্ষার্থীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্তাক্ত করেন।
খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে ছুটে আসেন অভিভাবকরা। পরে অভিভাবকদের উত্তেজনা দেখে স্কুল থেকে পালিয়ে যান শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ।
অভিভাবক মোঃ সবুজ জমাদার, হারুন খালিদসহ একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, বেতন কম পাওয়ায় শিক্ষার্থীদেরকে কোচিং ও প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করেন শিক্ষক। শিক্ষার্থীরা কোচিং ও প্রাইভেট পড়তে অপারগতা প্রকাশ করেন। যার ফলে শিক্ষক ক্ষুব্ধ হয়ে এমনটা করেন।
তবে এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ সাদেক চুয়াদ্দার ও প্রধান শিক্ষক মোঃ রুহুল আমিন বলেন, ঘটনাটা শুনেছি। অনেক অভিভাবক আমাদের কাছে অভিযোগ দিয়েছে। তবে এই বিষয়টা আমরা জেলা শিক্ষা অফিসকে জানাবো। ঘটনার সত্যতা জেনে মাসুম বিল্লাহ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই বিষয়ে শিক্ষক মোঃ মাসুম বিল্লাহ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষার্থীদেরকে অতিরিক্ত ব্যাতঘাতের ঘটনাটি সত্য। তবে কোচিং না করার কারণে ব্যাতঘাত করিনি। শিক্ষার্থীরা পড়া না পড়ায় তাদেরকে মেরেছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে আমার মাথা ঠিক ছিলোনা খুবই বিরক্ত হয়ে তাদেরকে এমনভাবে মেরেছি। ব্যাতঘাত অতিরিক্ত হয়েছে এর জন্য আমি সকলের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।
এই বিষয়ে জেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান জানান, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply