বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ভোর ৫:২২

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ

সরকারি মাছ বাজার ফাঁকা অবৈধ বাজার জমজমাট

dynamic-sidebar

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশাল মহানগরের বান্দ রোড এলাকায় গেলে কীর্তনখোলার পারে চোখে পড়বে বিএফডিসির বিশাল স্থাপনা। এটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, যেখানে আছে আধুনিক সব সুবিধা। কিন্তু সেখানে নেই কোনো কোলাহল। দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত পড়ে আছে কেন্দ্রটি।

 

তবে এখান থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে নৌবন্দর এলাকার চিত্র একেবারে উল্টো। সেখানে অবৈধ মাছ বাজারে চলছে জমজমাট বেচাকেনা। সেটি গড়ে উঠেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) জায়গা দখল করে।
বিএফডিসির (বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন) বরিশাল কার্যালয়ের মার্কেট সহকারী আ. রাজ্জাক হাওলাদার দুঃখ প্রকাশ করে বললেন, সব সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও সরকারি এত বড় মার্কেট পড়ে আছে। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। অথচ অবৈধ মাছ বাজারটা ঠিকই চলছে।

 

বিএফডিসির বরিশাল কার্যালয় সূত্র জানায়, ১৯৮৫ সালে সরকার কীর্তনখোলা নদীর তীরে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি নির্মাণ করে। এটি পাইকারি মৎস্য বাজার নামে পরিচিত। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কেন্দ্রটি চালু করে। তখন ব্যবসায়ীরা এখানে মাছ কেনাবেচা শুরুও করেন। সরকার বছরে প্রায় দেড় কোটি টাকা রাজস্ব পাচ্ছিল। কিন্তু ২০০৯ সালের ১৩ জুলাই ব্যবসায়ীরা পুরোনো অবৈধ স্থাপনায় ফিরে যান। এরপর অনেকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তাঁদের আর ফেরানো সম্ভব হয়নি।

 

কাজ না থাকায় কেন্দ্রের বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রটি দেখভালের জন্য এখন মাত্র তিনজন আছেন। সরকারি কেন্দ্রে যেতে ব্যবসায়ীদের অনীহার কারণ জানা গেল কেন্দ্রের অফিস সহকারী মো. মোতালেব খানের কাছ থেকে। তিনি বললেন, এখানে এলে ব্যবসায়ীদের সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে। আর বর্তমানে তাঁরা যেখানে আছেন, সেখানে আড়তদারেরাই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। সরকারকে কর দিতে হয় না। বিক্রেতাদের কাছ থেকে তোলা টাকা সমিতিই রাখে।

এ প্রসঙ্গে বরিশাল মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক নীরব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার যাঁদের জাল ও ট্রলার দিয়েছে, তাঁরা সরকারি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছ বিক্রি করবেন। আমরা স্থানীয় মাছ বিক্রেতারা বর্তমান মার্কেটে মাছ বিক্রি করছি।’

 

বিএফডিসির বরিশাল কার্যালয়ের সদ্য বিদায়ী ব্যবস্থাপক সিরাজুল ইসলাম বলেন, সরকারি জাল ও ট্রলার পাওয়া ব্যক্তিরাই কেবল ওই কেন্দ্রে মাছ বিক্রি করবেন, এটা ঠিক নয়।

 

তবে নীরব হোসেনের দাবি, জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে তাঁরা বর্তমান মাছ বাজারটি গড়ে তুলেছেন।
বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী এ জেড এম শাহনেওয়াজ কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ওই জায়গায় একসময় নৌবন্দর ছিল। চর জেগে ওঠায় সেখান থেকে বন্দর সরিয়ে আনা হয়েছে। সুতরাং জায়গাটা বিআইডব্লিউটিএর। তিনি বলেন, সেখান থেকে দখলদারদের উচ্ছেদে একাধিকবার উদ্যোগ নিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি এক উচ্ছেদ অভিযানে জেলা প্রশাসনও ছিল। তবে ব্যবসায়ীরা তখন নিজেদের উদ্যোগে বাজার সরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
বিএফডিসির কর্মকর্তারা সর্বশেষ ১২ জানুয়ারি বৈঠক করে ব্যবসায়ীদের সরকারি কেন্দ্রে ফিরে আসার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

 

এ প্রসঙ্গে মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অজিত দাস বলেন, ‘ওখানে যাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না।’ তিনি অজুহাত দেখালেন দুটি—বর্তমান বাজারে কার্যক্রম চালিয়ে ব্যবসায়ীরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন এবং সরকারি কেন্দ্রটিতে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই।

 

যদিও বিএফডিসির সূত্র বলছে, সরকারি কেন্দ্রটিতে আছে যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা। আছে সুবিশাল মার্কেট শেড, বরফকল, ১০ হাজার গ্যালনের একটি জলাধার, আড়তদারদের জন্য দ্বিতল একটি ভবন, একতলা কার্যালয় ভবন, কোল্ডস্টোরেজ, উন্নত সড়ক, ট্রাক পার্কিং জোন এবং নদী থেকে মাছ ওঠানো-নামানোর ব্যবস্থা।

 

বিএফডিসির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বললেন, অবৈধ মাছ বাজারটি কখনো বিএনপি, কখনো আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে টিকিয়ে রাখা হচ্ছে। তাই রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া এটি সরানো কঠিন।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net