শুধু বাঁচার জন্য জীবন বাজি রেখে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে নাফ নদীতে ভেলায় ভেসে ভেসে বাংলাদেশে এসেছেন ৬২ জন রোহিঙ্গা।আজ বুধবার সকালে কক্সবাজারের শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়া থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। এ দিন আরো ১০ রোহিঙ্গা নদীপথে নৌকায় করে বাংলাদেশে এসেছে।ভেলায় চড়ে যাঁরা এসেছেন তাদের মধ্যে ২২টি শিশু, ১৭ জন নারী ও ১৩ জন পুরুষ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি)-২ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম আরিফুল ইসলাম। তিনি আরো জানান, ভেলায় ভেসে আসা রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করে হেফাজতে রাখা হয়েছে।সহিংসতা শুরুর পর দুই দফায় কিছু যুবক জারিকেনের সহযোগিতায় নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তবে ভেলায় ভেসে ভেসে পরিবার-পরিজন নিয়ে দীর্ঘ নদীপথ পেরোনোর ঘটনা এটাই প্রথম।ভেলায় চড়ে আসা মিয়ানমারের বুচিডং শহরের চিংঅং গ্রামের বাসিন্দা নুরুল কবির বলেন, মিয়ানমার থেকে পালানোর জন্য নৌকা না পেয়ে চারদিন ধরে প্লাস্টিকের জারিকেন ও বাঁশ দিয়ে একটি ভেলা তৈরি করা হয়। পরে ওই ভেলায় ৫২ জনকে নিয়ে মিয়ানমারের মংডু শহরের দংখালী গ্রাম থেকে দিবাগত রাত ৩টার দিকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা। বইঠা চালিয়ে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে সকাল ৮টার দিকে টেকনাফের শাহপরীর
দ্বীপ জালিয়াপাড়ায় পৌঁছান। পরে বিজিবির সদস্যরা তাঁদের উদ্ধার করেন।নুরুল কবির আরো বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী ও রাখাইন উগ্রপন্থী যুবকদের অত্যাচারে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। গত কয়েক মাস ধরে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছেন মিয়ানমারের সেনারা। তাদের অমানবিক অত্যাচারে পালাতে বাধ্য হচ্ছে রোহিঙ্গারা। দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে অনেকে বাংলাদেশে পাড়ি দিতে পারলেও অনেকে আটকা পড়েছেন। বর্তমান সময়ে মিয়ানমার থেকে পালাতে নৌকার সংকট দেখা দেওয়ায় তাঁরা ভেলা তৈরি করেছেন।বিজিবি ২-এর অধিনায়ক এস এম আরিফুল ইসলাম বলেন, সকালে খবর পেয়ে ৫২ জনকে উদ্ধার করা হয়। তাদের মানবিক সহায়তা দিয়ে এক জায়গায় জড়ো করে রাখা হয়েছে। তাদের সঙ্গে ইয়াবা, অস্ত্র ও অবৈধ পণ্য আছে কি না তল্লাশি করে নির্ধারিত স্থান রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠানো হবে।কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরআরসি) হিসাব মতে, ২৫ আগস্টের পর থেকে গত ৬ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমার নাগরিকের সংখ্যা ছয় লাখ ২৩ হাজার।বাংলাদেশ পাসপোর্ট অধিদপ্তরের চলমান রোহিঙ্গা নিবন্ধনে গত ৬ নভেম্বর পর্যন্ত বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোট চার লাখ ৫৫ হাজার জনের নিবন্ধন করা হয়েছে।
সমাজসেবা অধিদপ্তর গত সোমবার পর্যন্ত ৩৬ হাজার এতিম শিশু শনাক্ত করেছে।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply