প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আর যেন পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা, পদলেহনকারীরা ইতিহাস বিকৃতি করার সুযোগ না পায় সে জন্য সবাইকে জাগ্রত থাকতে হবে। এতদিন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। আজ নতুন সূর্য দেখা দিয়েছে, নতুন প্রত্যয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে- এটা আমাদের প্রতিজ্ঞা।
শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগরিক সমাজ আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ডকুমেন্ট স্বীকৃতি প্রদান উপলক্ষে নাগরিক সমাজ এ সমাবেশের আয়োজন করে। নাগরিক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন এমিরেটাস অধ্যাপক অানিসুজ্জামান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রামেন্দু মজুমদার ও নুজহাত আলীম।
সমাবেশ শুরুর আগে মঞ্চের মাইক থেকে দেশাত্মবোধক, নজরুল গীতি, রবীন্দ্র সঙ্গীত ও লালনগীতি পরিবেশন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ২টা ৪০ মিনিটে সমাবেশ স্থলে পৌঁছান। অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব শহীদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন, গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক থেকে পাঠ করা হয়।
এর পরই সমবেতভাবে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করা হয়। সমাবেশ চলাকালে নির্মলেন্দু গুণ ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর কবিতা পাঠ করেন। এছাড়া সমাবেশে বক্তব্যের মাঝে মাঝে রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুলগীতি ও লালনগীতি, ভাওইয়া পরিবেশন করা হয়। শিল্পী মমতাজ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত গান পরিবেশন করেন। সমাবেশে প্রস্তাব পাঠ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে তিনি ইউনেস্কোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রস্তাবটি ইউনেস্কোর কান্ট্রি ডিরেক্টরের হাতে হস্তান্তর করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট নজরুল গবেষক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জাফর ইকবাল, ইউনেস্কোর কান্ট্রি ডিরেক্টর বিয়েট্রিস খলদুন, বিশিষ্ট সাংবাদিক সমকাল পত্রিকার সম্পাদক গোলাম সারওয়ার ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা আর যেন ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করতে না পারে সেজন্য সকলকে জাগ্রত থাকতে হবে। ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোতে স্থান পেয়েছে, রাষ্ট্রভাষা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্থান পেয়েছে। এ জন্য আমরা গর্বিত জাতি। এ উচ্চ শির যেন আর নত না হয়। যারা এক সময় ৭ মার্চের ভাষণকে নিষিদ্ধ করেছিল, আজ যখন এ ভাষণ ইউনেস্কোতে স্থান পেল তখন কি তাদের লজ্জা হয় না। এ ভাষণের জন্য কত মানুষকে হত্য করা হয়েছে। কত মানুষকে নির্যাতন করা হয়েছে। তার পরও মানুষ থেমে থাকেনি। এ ভাষণ যতই বন্ধ করতে চেয়েছে ততই তা বেশি প্রচারিত হয়েছে। এ ভাষণ এতবার এতদিন এতঘণ্টা প্রচারিত হয়েছে যে পৃথিবীর কোনো ভাষণ এত প্রচার হয়নি।
তিনি বলেন, যারা পাকিস্তানি নাগরিক তারা এ ভাষণ নিষিদ্ধ করতে পারেনি অথচ বাংলাদেশি পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা এ ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিল। ইতিহাস থেকে তারা জাতির পিতার নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু তা পারেনি। প্রকৃত ইতিহাস কখনও মুছে ফেলা যায় না। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো।
শেখ হাসিনা বলেন, ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এ স্বাধীনতা। বাঙালি জাতিকে একটি দেশ উপহার দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু বছরের পর বছর জেল খেটেছেন। বাঙালি জাতিকে শোষণ-বঞ্চনার হাত থেকে রক্ষা করতেই ছিল বঙ্গবন্ধুর এ সংগ্রামী জীবন।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply