রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৯:১৬

শিরোনাম :
প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ বরিশাল সদরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাদিস মীরের মনোনয়ন দাখিল বরিশালে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস জনজীবন,বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ! বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এসএম জাকির হোসেনের মনোনয়নপত্র দাখিল

চাঁদাবাজি বন্ধে করণীয়

dynamic-sidebar

মহাসড়কে মহাসমারোহে চলিতেছে চাঁদাবাজি। রাজধানী শহরের ৯টি প্রবেশমুখেও চলমান রহিয়াছে চাঁদাবাজির উত্সব। এইসকল ক্ষেত্রে চাঁদাবাজির শিকার পণ্যবাহী পরিবহন আর অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। ইত্তেফাকের প্রতিবেদন হইতে জানা যাইতেছে, পণ্যবাহী ৩ লাখ ৫৫ হাজার ২৮৭টি যানবাহনকে রাস্তায় প্রতিদিন গড়ে ১০ কোটি ৬৫ লাখ ৮৬ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। রাস্তায় ব্যাপক চাঁদাবাজির কারণে বৃদ্ধি পায় পণ্যের মূল্য, ইহার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সাধারণ জনগণের উপর। চাঁদাবাজি-হয়রানি বন্ধে পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ে কার্যকর হইতেছে না। রাস্তায় গাড়ি আটকাইয়া চাঁদাবাজি চলমান রহিয়াছে। হাইওয়ে পুলিশের চাইতে জেলা পুলিশের হয়রানি ও চাঁদাবাজির মাত্রা বেশি বলিয়া জানা গিয়াছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অধঃস্তনরা মান্য করিতেছে না। ইহার অর্থ হইলো কোথাও কোনো গলদ রহিয়াছে। হয় পুলিশের চেইন অব কমান্ড অকার্যকর অথবা এইসকল নির্দেশনা লোকদেখানো। চাঁদাবাজি হইতে সংগৃহীত অর্থ চ্যানেল অনুসরণ করিয়া ঊর্ধ্বতন পর্যায় পর্যন্ত সরবরাহ হইতেছে কিনা তাহাও বিবেচনার বিষয় হইতে পারে। সেইরকম হইলে কোনো নির্দেশনাই ঠিকমতো কার্যকর হইবে না। পরিবহন মালিকপক্ষ জানাইতেছে, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করিলে কিছুকাল চাঁদাবাজি সহনীয় মাত্রায় চলে। কিন্তু ইহার পর পূর্বের ন্যায় চাঁদাবাজি অব্যাহত থাকে। পরিবহন মালিকরা ধর্মঘটসহ নানান কর্মসূচির উদ্যোগ নিয়াও সুফল পান নাই। অন্যদিকে পুলিশের দিক হইতে বলা হইতেছে, হয়রানির অভিযোগ সকল ক্ষেত্রে সঠিক নহে। তবে স্থানীয় পর্যায়ে সুরাহা না হইলে ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ করিতে হইবে।

যেইভাবে পণ্য পরিবহন করা হয়, সেইক্ষেত্রে নিশ্চয়ই পরিবহন মালিকদের ফাঁকি দিবার ও আইন অমান্য করার কিছু প্রবণতা রহিয়াছে। কিন্তু পণ্য পরিবহন করিতে গিয়া যে প্রচুর টাকা মহাসড়কে অথবা শহরের প্রবেশমুখে প্রদান করিতে হয়, ইহা লইয়া কোনো সন্দেহ নাই। সচেতন হইয়া যে কেহ একটু দৃষ্টি দিলেই প্রকাশ্যদিবালোকে এইরূপ চাঁদাবাজির দৃশ্য দেখিতে পাইবেন। চাঁদাবাজি যেন এক অলঙ্ঘনীয় বিষয়ে পরিণত হইয়াছে। এইধরনের চাঁদাবাজির ফলে একশ্রেণির পুলিশ অবৈধ উপায়ে প্রচুর অর্থের মালিক হইতেছেন, কিন্তু ইহার ফল ভোগ করিতেছেন সাধারণ মানুষেরা, যাহাদের অধিক মূল্যে পণ্য ক্রয় করিতে হইতেছে। অথচ পুলিশেরই দায়িত্ব ছিল পণ্য পরিবহনের জন্য সকল সহযোগিতা করা যাহাতে বৃহত্তর মানুষের কাছে নির্বিঘ্নভাবে পণ্য পৌঁছাইতে পারে।

চাঁদাবাজি কেবল পণ্য পরিবহন খাতেই দৃশ্যমান এমন নহে। কমবেশি সর্বত্রই চাঁদাবাজি আছে। ফার্সি শব্দ চান্দাহ্ থেকে এসেছে চাঁদা শব্দটি যার অর্থ কোনো বিশেষ মহত্ কাজ সম্পাদনের জন্য অনেক লোকের নিকট থেকে সংগৃহীত অর্থ। ইহাই যখন জোর-জুলুমভাবে ও ব্যক্তি-গোষ্ঠী স্বার্থে অন্যায়ভাবে আদায় করা হয়, তখনই তা চাঁদাবাজিতে রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে পুলিশের চাঁদাবাজি চলিতেছে অন্যান্য ক্ষেত্রেও। অবৈধ দোকানপাট কিংবা অন্য যেকোনো দখলদারিত্ব পুলিশকে চাঁদা দিয়াই লোকে চালাইয়া যাইতেছে। এইসকল চাঁদাবাজির মচ্ছবে পুলিশের সঙ্গে যোগ দেন ক্ষমতাসীন দলের ক্ষুদ্র-বৃহত্ নেতা-কর্মীরাও। কেহ বসতবাড়ি নির্মাণ শুরু করিলে, কেহ নূতন ব্যবসা শুরু করিলে, অথবা নানান দিবস উপলক্ষে চলে চাঁদাবাজি। অর্থাত্ যাহাদেরই হাতে ক্ষমতা রহিয়াছে, তাহারাই যেন এইসকল কাজে নিযুক্ত। রক্ষকরাই ভক্ষকরূপে দুর্বৃত্তায়ন চালাইয়া যাইতেছে। তাই কেবল সাময়িক অভিযান দিয়া চাঁদাবাজি বন্ধ করা যাইবে না। ক্ষমতাকেন্দ্রিক দুর্নীতির যে প্রক্রিয়া চলিতেছে তাহার মূলে নজর দিতে হইবে।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net