তিনদিন ধরে পানি নেই বরিশাল সদর হাসপাতালে। এতে রোগীসহ হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রোগীর সঙ্গে থাকা লোকজনকে বাইরে থেকে পানি সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় কাজ সারতে হচ্ছে।
পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় অস্ত্রোপচারসহ রোগীদের চিকিৎসাসেবার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি পানি সংকটে অন্তর্বিভাগে রোগী ভর্তি প্রায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নোংরা হয়ে আছে হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোর শৌচাগারগুলো । দুর্গন্ধ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে।
এদিকে হাসপাতালের গাইনি বিভাগের শৌচাগার প্রায় এক মাস ধরে ব্যবহারের অনুপযোগী। মলমূত্র শৌচাগারের মেঝেতে ছড়িয়ে রয়েছে। দুর্গন্ধে এর আশপাশ দিয়েও হাঁটা যায় না। পরনের কাপড় ধরে সাবধানে কেউ জলমগ্ন মেঝে পেরিয়ে শৌচাগারে গিয়ে বের হলে এই ময়লা পানি পায়ে পায়ে ছড়িয়ে পড়ছে ওয়ার্ডের ভেতরে। এতে ওয়ার্ডে রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
হাসপতাল সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, প্রায় এক মাস ধরে ব্যবহারের অনুপযোগী গাইনি বিভাগের শৌচাগার। এরপরও কর্তৃপক্ষ শৌচাগার পরিষ্কারের কোনো ব্যবস্থা করছে না।
হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে ভর্তি রোগীর স্বজনরা জানান, পানি না থাকায় চরম কষ্ট হচ্ছে। ব্যবহারের জন্য বাইরে থেকে পানি বয়ে নিয়ে আসতে হচ্ছে। খাবার পানির বোতল কিনতে হচ্ছে।
রোগীর স্বজনরা জানান, গত বৃহস্পতিবার থেকে পানির লাইনে বালু ও ময়লা আসছে। ওই পানি খাওয়া তো দূরের কথা ব্যবহারও সম্ভব নয়। পানি না থাকায় ওয়ার্ডের ফ্লোর থেকে শুরু করে টয়লেট পরিষ্কার বন্ধ রয়েছে। দুর্গন্ধে রোগীদের চিকিৎসা সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বাইরে থেকে পানি সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় কাজ সারতে হচ্ছে। তবে কবে নাগাদ পানির লাইন সচল হবে তা জানাতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, শনিবার দুপুর পর্যন্ত অন্তর্বিভাগে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১১০ জন। গড়ে প্রতিদিন ভর্তি হয় ৩০ থেকে ৪০ জন। এর মধ্যে ৩০ জনই ডায়রিয়ার রোগী। পানি না থাকার কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এ কারণে গুরুতর অসুস্থ রোগী ছাড়া ভর্তি করা হচ্ছে না।
বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেন জানান, পানিতে বালু ও ময়লা দেখা দেয়ায় সদর হাসপাতালে পানি সরবারহ বন্ধ রয়েছে। গভীর নলকূপ মেরামত করতে বিষয়টি স্বাস্থ্য প্রকৌশল ও গণপূর্ত বিভাগকে জানানো হয়েছে।
বরিশাল স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সহকারী প্রকৌশলী আলতাফ হোসেন জানান, গভীর নলকূপের ফিল্টার নষ্ট হয়ে পানির সঙ্গে বালু উঠছে। পানি সরবরাহ করতে বিকল্প ব্যবস্থা ও গভীর নলকূপ মেরামতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply