কাউখালী প্রতিবেদকঃ
আল আমিন দারিদ্রতাও দমিয়ে রাখতে পারেনি পেয়েছে গোল্ডেন জিপিএ-৫। প্রায় ওদের ঘরে খাবার থাকতোনা। তাইতো না খেয়ে রাতে পড়তে বসতে হতো ওকে। বিভিন্ন সময় না খেয়েই স্কুলে যেতে হতো ওকে। পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়নের হোগলা বেতকা গ্রামের আল আমিনের বাড়ি হলেও থাকে উপজেলার দক্ষিণ বন্দর হাসপাতাল রোডের একটি ঝুপড়ী ঘরে। তাও আবার ভাড়ায়। ওর বাবার পক্ষে মাঝে মধ্যে চাল আনার পয়সা জোগার করা সম্ভব হতো না। দিনমজুর বাবার পক্ষে দুবেলা দুমুঠো খাবারের ব্যবস্থা করতে হিমশিম খেতে হতো। এরইমধ্যে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ যোগার করা কঠিন হয়ে পড়ে। এমনই অবস্থায় ওদের শ্রমিক হওয়ার কথা কিন্তু অদম্য মেধাবী আল আমিনের বেলায় তার ঘটেনি। শত বাধা পেরিয়ে এ বছর ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষে ২০১৭ সালে কাউখালী সরকারি কে.জি ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। শিক্ষকরা জানালেন এক দিনের জন্যে স্কুলে ফাঁকি দেয়নি আল আমিন। পড়ালেখায় সে ছিল খুবই মনোযোগী। তারই ফল সে পেয়েছে। উপজেলার লোকজন তাকে এখন চেনে গোল্ডেন বয় হিসাবে। আল আমিন বলে বাবা মা স্কুলের সব খরচ যোগার করতে পারে নাই। স্থানীয় শিক্ষানুরাগী খসরু চাচা ও পল্টন চাচা প্রায়ই, প্রাইমারী থেকে এ পর্যন্ত আমাকে নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। আমি লেখা পড়া করে সংসারের অভাব দূর করতে চাই। আল আমিনের বড়বোন সুমি পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়াদী কলেজে অনার্স ৩য় বর্ষের বোটানি বিষয়ের ছাত্রী। আল আমিনের সেজো ভাই শামিম হোসেন কাউখালী মহাবিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র। তিন সন্তানই লেখাপড়ায় খুবই মনোযোগী হওয়ায় তাদের লেখাপড়ার খরচ যোগার করতে বাবা মোঃ ইমাম হোসেন রাজ মিস্ত্রির কাজ করেন। মা শাহেনুর বেগম নিজের সংসারের কাজ করার ফাকে মাঝে মধ্যে অন্যের বাড়িতে কাজ করে। ছেলের ফলাফলে বাবা ইমাম হোসেন মা শাহীনুর বেগম খুশী। ওদের একই সঙ্গে পড়াশুনা চালিয়ে নিতে শংকিত। তিনি বলেন, অভাব অনটনের মধ্যে তিন সন্তানের লেখাপড়া চালাতে খুবই হিমশিম খেতে হয়। ওদের কখনও ভাল খাবার ও নুতন কাপড় দিতে পারি নাই।
ভবিষ্যতে মানবসেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চায় বলে জানিয়েছেন আল আমিন। তাই সে ডাক্তার হতে চায়।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply