বুধবার, ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ২:১৭

শিরোনাম :
মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ বরিশাল সদরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাদিস মীরের মনোনয়ন দাখিল বরিশালে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস জনজীবন,বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ!

বিসিসির অবহেলিত ২২নং ওয়ার্ড নিয়ে প্রার্থীদের ভাবনা

dynamic-sidebar

এইচ আর হীরা ॥ আগামী ১২ জুন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। ইতিমধ্যে নির্বাচনকে ঘিরে বরিশালে শুরু হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পরপরই আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা।নির্বাচন অফিসের তথ্য অনুযায়ী বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ৭ জন এবং ৩০ টি ওয়ার্ডে মোট কাউন্সিলর প্রার্থী ৫০ জন।

 

 

নগর ঘুরে দেখা যায়, বিসিসির ৩০টি ওয়ার্ডেই পোষ্টার, ব্যানার,মাইকিং ও গণসংযোগের মাধ্যমে প্রচারনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। এতে উৎসব মুখর হয়ে উঠেছে নগরীর পাড়া-মহল্লা। গত (২৬মে) শুক্রবার প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পরপরই আওয়ামী লীগ, ইসলামী আন্দোলন,জাতীয় পার্টি এবং স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে নগরীর প্রধান সড়কসহ পাড়া মহল্লার অলিগলি।

 

 

নির্বাচন কমিশনের বেধে দেয়া সময় মেনে প্রতিদিন দুপুর ২টার পর মাইকের প্রচারণা শুরু হয়ে চলে রাত পর্যন্ত । তেমনিই প্রচার প্রচারনায় ব্যস্ত নগরীর ২২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা। পোস্টার, ব্যানার, মাকিং ও গণসংযোগে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে পুরো ওয়ার্ডজুড়ে। ওয়ার্ডের প্রতিটি ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রার্থীরা বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের তাদের সমর্থনে আনার চেস্টা করছেন। নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, ২২নং ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা দশ হাজার ৬৪জন এবং ভোট কেন্দ্র ৪ টি।

 

 

সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে যানা যায়, গত ১৫ বছরে এই ওয়ার্ডে তেমন কোনো কাজই হয়নি। প্রায়ত কাউন্সিলর এ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান আতিকের সময়কালে ওয়ার্ডটির প্রধান সড়কের কাজ হয়। তার পরে দীর্ঘ ১৫ বছরে ঐ সড়কের নতুন কোনো কাজ বা সংস্কার করা হয়নি। আর তাতে করে জিয়া সড়ক এলাকার প্রধান সড়কটি এখন মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনা।নেই ড্রেনেজ ব্যবস্থা।এবারের নির্বাচনে এই ওয়ার্ড থেকে মো: আনিচুর রহমান দুলাল ঠেলা গাড়ি ,মো: আশ্রাব আলী খান ঘুড়ি এবং মিসেস জেসমিন সামাদ শিল্পী লাটিম প্রতিকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

 

 

গত নির্বাচনে এই ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন মো: আনিচুর রহমান দুলাল। ওয়ার্ডের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে তিনি বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে দোষারোপ করে বলেন, আমরা এমন এক মেয়রের অধীনে কাউন্সিলর ছিলাম যার কারনে কোন উন্নয়ন মূলক কাজ কার সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র বরিশাল সিটি কর্পোরেশন যেখানে এই মেয়রের আমলে কোন বরাদ্দ আসেনি। নগরীতে যে কাজ হয়েছে মেয়র তার নিজের মত করে নির্ধারিত ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজ করিয়েছেন। আর এ কারনেই আমি এলাকার কোন উন্নয়ন করতে পারিনি।তিনি আরও বলেন,আওয়ামী লীগের নব নির্বাচিত মেয়র প্রার্থীকে যদি আমরা বিজয়ী করতে পারি তাহলে আমরা অনেক বরাদ্দ পাবো।

 

 

তিনি আরো বলেন,ওয়ার্ডবাসি যদি পুনরায় তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করে তাহলে আমি প্রথমেই আমার ওয়ার্ডের রাস্তার উন্নয়ন করবো এবং ওয়ার্ডের অসম্পূর্ণ কাজ গুলো সমাপ্ত করবো। আমি ওয়ার্ডবাসীর কাছে দোয়া ও ভোট প্রার্থনা করছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা বলেন,গত চার বছরে ওয়ার্ডে কোন উন্নয়ন মূলক কাজ হয়নি। এলাকার রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ বৃষ্টি হলে রাস্তায় পানি জমে যার কারনে রাস্তায় চলাচলে জীবনের ঝুঁকি থাকে। মামুন হাওলাদার নামের এক বাসিন্দা বলেন, আমাদের ওয়ার্ডের সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ।

 

 

শুনেছি বর্তমান কাউন্সিলর বরাদ্দ না পাওয়াতে কোনো কাজ করতে পারেনি।তবে এবারের যে কাউন্সিলর নির্বাচিত হবে তার কাছে আমাদের দাবী থাকবে তিনি যেনো আমাদের রাস্তার কাজটি সর্বপ্রথম করে এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থার দিকে খেয়াল করে।বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক সহ সভাপতি মো: ফাইজুল ইসলাম সজিব জানান, বর্তমানে ২২নং ওয়ার্ডে ড্রেনেজ সমস্যা সমাধানে কাজ করা অতীব জরুরি। এছাড়াও এলাকায় বাচ্চাদের খেলার কোন মাঠ নেই। আমরা ওয়ার্ডবাসী আশা করি এই নির্বাচনে যে কাউন্সিলর প্রার্থী জয়ী হবে সে যেনো আমাদের এই দুঃখ দূর্দশার কথা মাথায় রেখে ওয়ার্ডের উন্নয়ন মূলক কাজ করে আমাদের পাশে দাড়ায়।

 

 

ওয়ার্ডের আরেক কাউন্সিল প্রার্থী মো: আশ্রাব আলী খান বলেন, বিগত দিনে ওয়ার্ডে কোন কাজ হয়নি।বৃষ্টি হলে এই ওয়ার্ডে হাটু সমান পানি ওঠে। জনগন আমার পাশে যেভাবে দাঁড়িয়েছে আমি যদি জয়ী হই এই ওয়ার্ডের চিত্র পাল্টে দিবো। সবার জন্য আমার দরজা খোলা থাকবে । করোনাকালিন সময় যখন ত্রান বিতরন করা হয়েছে তা আমি নিজে কাঁধে করে সকলকে ত্রান পৌঁছে দিয়েছি। বিগত দিনে যেভাবে আমি জনগনের পাশে ছিলাম ভবিষ্যতেও আমি এভাবেই কাজ করে যেতে চাই।তিনি আরও বলেন, শক্তিশালী একটি মহল আছে যারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে যাতে আমি জয়ী না হতে পারি।এজন্য আমি সকলের সাহায্য সহযোগিতা চাই। জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবে। আমি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই।সকলের কাছে আমি দোয়া চাচ্ছি। এদিকে বিএনপি নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়ায় এ ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত দুই কাউন্সিলর প্রার্থী আ ন ম সাইফুল আহসান আজিম ও মোহাম্মাদ হাবিবুল্লাহ তাদের মনোনায়পত্র প্রত্যাহার করেছেন।

 

 

এ বিষয়ে ২২ নাম্বার ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য আ ন ম সাইফুল আহসান আজিম বলেন, “আমি দুইবার কাউন্সিলর ছিলাম তারাপরও সরে দাঁড়াচ্ছি কারণ আমার দল এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবেনা। তবে বিএনপির কাউন্সিলর সিড়িতে না থাকলে আমাদের লোকজন বয়ষ্ক ভাতাসহ আরো অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। দলীয় সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দিয়ে সরে দাঁড়ানো ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী এবং বরিশাল জেলা দক্ষিন যুবদলের যুগ্ন সম্পাদক মোঃ হাবিবুল্লাহ বলেন, সাধারন জনগণের চাওয়াতে নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন ফরম কিনে ছিলাম এবং সাধারন ভোটারদের চাপে পরেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি।

 

 

কিন্ত শেষ পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে পারিনি। তাই দলের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ২২নং ওয়ার্ডের সার্বিক উন্নয়ন এবং সুখে দুঃখে যে পাশে থাকবেন তাকেই কাউন্সিলর হিসেবে বেছে নিতে চান ওয়ার্ডবাসী।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net