শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৫:৩৭

শিরোনাম :
প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ বরিশাল সদরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাদিস মীরের মনোনয়ন দাখিল বরিশালে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস জনজীবন,বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ! বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জসিম উদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এসএম জাকির হোসেনের মনোনয়নপত্র দাখিল

গলির পেট্রোল এখন রাজপথে !

dynamic-sidebar

ইচ্ছে করলেই যেকোনো ব্যাক্তি চাইলেই নিতে পারে বোতল ভর্তি পেট্রোল।
এইচ আর হীরা :
বরিশাল নগরী ও জেলার রাস্তাঘাট, বাজার এলাকা থেকে শুরু করে ওষুধের দোকানের সামনে ছোট্ট টুল। তার উপরে বোতলে সোনালি রংয়ের তরল। টুলের উপরে বোতল বন্দি তরল আর কিছুই নয়। গাড়ির জ্বালানি পেট্রোল। এই হল পুঁজি । হঠাৎ গজিয়ে ওঠা নগরীর অলিগলির পেট্রোল পাম্প। নগরজুড়ে এভাবেই অবাধে বিক্রি চলছে এই পেট্রোল। নিরাপত্তার প্রশ্নকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিব্যি চলছে অবৈধ এই ব্যবসা। দামেরও কোন ঠিক নেই।

যেখানে যেমন খুশি আসলের উপর বাড়িত দাম চাপিয়ে নেওয়া হচ্ছে। দিতেই হবে। নইলে বাইক ঠেলতে হবে। তাই খোলা পেট্রোলের রমরমা বানিজ্য চলছে অহরহ। আড়াল আবডালের কিছু নেই। ব্যবসা চলছে প্রকাশ্যে চোখের সামনে। আর পাঁচটা ব্যবসার মতোই। বরিশাল নগরীর অলিগলিতেই এই বাব্যসা বেশি। পেট্রোল পাম্প যত দূরে থাকে ততই এই ব্যবসা রমরমা।

মুনাফাও বেশি। বাড়ির সামনে জ্বালানি মিলে যাওয়ায় অনেকে এখন আর পাম্পে যেতে চান না। তাই বিপজ্জনক হলেও তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলে না কেউ। প্রয়োজনীয় জনবল ও ম্যাজিস্ট্রেট না থাকার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে বিস্ফোরক পরিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়।

এদিকে চলমান বিএনপির অবরোধে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবহৃত হচ্ছে এই খোলা বোতলের পেট্রল বোমা। গত কয়েক দিনে রাজধানী ঢাকাসহ বেশকিছু বিভাগ ও জেলায় গণপরিবহনে পেট্রল বোমার মাধ্যমে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ফাঁকা জায়গাকে টার্গেট করে এসব বোমারুরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে। পাশাপাশি এসব অপরাধী খুব সহজেই প্রকাশ্যে পেট্রল বোমার সরঞ্জামাদি পাচ্ছে হাতের নাগালেই। যদিও বরিশাল নগরী ও জেলার কোথাও এখনও এরকম কোন অপ্রতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর সোনামিয়ার পোল এলাকায় দেখা যায়, একটি বোতলভর্তি পেট্রল নিয়ে যাচ্ছেন এক ব্যক্তি। বোতলে করে কেন পেট্রল নিচ্ছেন জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি জানান, তার এক বড় ভাই বোতলে করে পেট্রল নিতে বলেছেন। তাই তিনি দোকান থেকে পেট্রল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। নবগ্রাম রোড এলাকার চৌমাথা থেকে কড়াপুর ব্রিজ পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় ১০ থেকে ১৫টি দোকানে প্রকাশ্যেই খাবার পানির খালি বোতলভর্তি পেট্রল ও অকটেন বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে। যেকোনো মানুষই সেখান থেকে পেট্রল অকটেন কিনতে পারছেন।

দোকানগুলোতে ড্রাম ও বোতলভর্তি কয়েকশ লিটার পেট্রল ও অকটেন মজুদ রয়েছে। বিস্ফোরক পরিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পেট্রোলিয়াম সংক্রান্ত আইন অনুসারে বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়া কোনো দোকানে জ্বালানি তেল বিক্রি করা যাবে না। লাইসেন্স ছাড়া পেট্রোলিয়াম আমদানি, মজুত, পরিবহন, বিতরণ, উৎপাদন, শোধন ও মিশ্রণসহ আইনের কোনো ধারা বা লাইসেন্সের শর্ত লঙ্ঘনকারীকে ৬ মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।

অথচ বরিশাল জেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, সাধারণ ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে, এমনকি কোনো বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই এসব প্রতিষ্ঠান ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। জানা যায়, বরিশাল জেলায় ২৯টি (ট-ফরম) পেট্রোল পাম্পের জ্বালানি তেল বিক্রির বৈধ লাইসেন্স ও অনুমোদন রয়েছে। এছাড়া জেলায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির (এম-ফরম) পেট্রোলিয়াম বিক্রির বৈধ লাইসেন্স ও অনুমোদন রয়েছে ৫৪টি প্রতিষ্ঠানের।

পাশাপাশি আরও ৪২টি প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় শ্রেণির (ঝ-ফরম) পেট্রোলিয়াম বিক্রির বৈধ লাইসেন্স ও অনুমোদন রয়েছে। এছাড়া (চ-ফরম) এলপিজি সিলিন্ডার ও গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির অনুমোদন রয়েছে ২০৭টি প্রতিষ্ঠানের।এ ব্যাপারে বিস্ফোরক পরিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী বিস্ফোরক পরিদর্শক বিমল কুমার মন্ডল বলেন, প্রয়োজনীয় জনবল ও ম্যাজিস্ট্রেট না থাকার কারণে অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।

তারপরও বিভাগের বিভিন্ন জেলায় নিয়মিত পরিদর্শন করে প্রতিষ্ঠানগুলোতে অনিয়ম পেলে তাদের বিরুদ্ধে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। তাদের অফিসে যোগাযোগ করে অনুমোদন নিয়ে ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।বরিশাল জেলা সচেতন নাগরীক কমিটি (সনাক) প্রফেসর (অবঃ) শাহ সাজেদা অবশ্য এই পরিস্থিতির জন্য প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটে গেলে তখন কিছু করার থাকবেনা।

এ ব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন,আপনারা নিশ্চই অবগত রয়েছেন চলমান অবরোধে নগরীতে ২৪ঘন্টা কাজ করছে আমাদের বিভিন্ন ইউনিটের টিম। নগরীতে কোনো ধরনের অপ্রতিকর ঘটনা মোকাবেলায় আমরা সর্বদা প্রস্তুত রয়েছি। এছাড়াও পেট্রোল পাম্প মালিকদের সাথে গত ১৫দিন পূর্বে একটি মিটিং করা হয়েছে। যেখানে তাদেরকে খোলা তেল বিক্রিতে নিষেধ করা হয়। তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র সচেতন করার বানী শুনিয়ে লাভ নেই।

নিজেদেরও সচেতন হয়ে একত্রিতভাবে কাজ করতে হবে। নগরীতে যারা ডিলার অনুমোদন নিয়ে তেল বিক্রি করে প্রথমত তাদের সচেতন হতে হবে। কারণ আমরা যখনি এসকল বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করতে মাঠে যাই তখনি তারা সবকিছু লুকিয়ে রাখে।এবিষয়ে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net