খবর বরিশাল ॥ বরিশাল-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর মিছিলে হামলা ও গুলি চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার দুপুরে বানারীপাড়া উপজেলার বাইশারী গ্রামে এ ঘটনায় স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থী একে ফাইয়াজুল হক রাজুর অন্তত ৪০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন এবং ১২টি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে তিনি নিজেই অভিযোগ করেছেন।
হামলার বিষয়টি পুলিশ স্বীকার করলেও আহত হওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি। শেরই বাংলা একে ফজলুল হকের নাতি ফাইয়াজুল ঘটনার বর্ণনায় বলেন, উপজেলার বাইশারী গ্রামে দুপুরে মোটরসাইকেল নিয়ে ঈগল প্রতীকের পক্ষে মিছিল করছিলেন তার কর্মীরা। মিছিলটি বাইশারী কলেজের উত্তর পাশে পৌঁছালে অস্ত্র-লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে দুর্বৃত্তরা।
তারা ঈগলের কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি করে এবং এলোপাতারিভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। এতে অন্তত ৪০ কর্মী আহত হয়। পরে হামলাকারীরা ১২টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ এবং চারটি ভেঙে ফেলে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে বলে জানিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী বলেন, “সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।
তারা কি ব্যবস্থা নেয়, সেটাও দেখবো। ” হামলাকারীদের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হবে। এ হামলা চলিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ভঙ্গ করেছে হামলাকারী সন্ত্রাসীরা?” নিজেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সদস্য দাবি করে ফাইয়াজুল বলেন, “আমার দাদা ছিলেন শেরে বাংলা একে ফজলুল হক।
তার বাবা ফায়জুল হক আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি ও মন্ত্রী ছিলেন। তাদের ওপর এ হামলা মেনে নেওয়া যায় না।” প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার বাইশারী থেকে স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থী ফাইয়াজুল হকের কর্মীরা ৩০-৩৫টি মোটরসাইকেলে মিছিল নিয়ে ইলুহারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বাইশারী কলেজের সামনে শতাধিক লোক মিছিলে হামলা করে।
তারা মিছিলে থাকা লোকজনের ওপর পাঁচ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে এবং এলোপাতারি পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। পরে বিজিবি সদস্যরা এলে হামলাকারীরা চলে যায়। পরে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা ও শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
প্রেসব্রিফিংয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম ফারুক বলেন, নৌকার গণজোয়ার ও নিজেদের পরাজয় আচ করতে পেরে ঈগলের সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর অর্তকিত হামলা চালিয়ে তাদের আহত করেছে এবং নিজেরা মটরসাইকেল পুড়িয়েছে। এ ব্যপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
বানারীপাড়া থানার ওসি মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, “স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের ১২টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে; চারটি ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বা তার কর্মীরা কেউ আহত হয়েছেন কিনা জানি না।” বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অন্তরা হালদার বলেন, “১২টি মোটরসাইকেল পোড়া ও চারটি ভাঙা অবস্থায় পেয়েছি। তবে গুলির কোন আলামত পায়নি।” এ ঘটনায় দ্রুত মামলা করে জড়িতদের গ্রেপ্তারে ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, বরিশাল-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন (নৌকা প্রতীক), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নকুল কুমার বিশ্বাস (গামছা প্রতীক), তৃণমূল বিএনপির মো. শাহজাহান সিরাজ (সোনালী আঁশ), ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির এনপিপির সাহেব আলী (আম), স্বতন্ত্র মো. মনিরুল ইসলাম (ঢেকি)। আর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস (লাঙল) ‘প্রহসনের নির্বাচন’ হতে যাচ্ছে অভিযোগ করে ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply