গরু চোরদের সাথে আপোষ-রফার অভিযোগ পাওয়া গেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন বন্দর (সাহেবেরহাট) থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) ফয়সাল আহম্মেদ অর্থসমঝোতায় ভিত্তিতে তিন চোরকে মুক্তি দিয়েছেন (!) ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতের এই খবরে স্থানীয় গরু মালিকদের মাঝে চরম আকারে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বিগত সময়ে গরু চুরির শিকার মালিকরা থানা পুলিশের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে।এই পুরো বিষয়টি তাঁরা এবার বরিশাল সদর আসনের সাংসদ পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক শামিমকে অবহিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।যদিও ওসি ফয়সাল আহম্মেদ গরু চোর ছাড়ার পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
তবে থানা পুলিশের ভেতরকার একটি সূত্র বলছে- স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার মধ্যস্ততায় ওসি ফয়সালের সাথে রফাদফা হয়েছে। যে বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশেও তোলপাড় চলছে। কিন্তু থানার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হওয়ায় কেউ মুখ খুলছেন না।একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে- গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বন্দর থানাধীন বদিউল্লাহ গ্রামের বাসিন্দা মো. দুলাল হাওলাদারের পুত্র সুরুজ হাওলাদারের বাড়ি গোয়ালে চোর হানা দেয়। তখন ঐক্যবদ্ধ জনতা ধাওয়া দিলে একটি ট্রলার ফেলে চোররা পালিয়ে যায়। তখন তিনটি গরু উদ্ধারের পাশাপাশি ট্রলারটিকে আটক করে থানা পুলিশের সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোশারফ হোসেন।স্থানীয় জনতার বরাত দিয়ে টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. বাহাউদ্দিন আহম্মেদ জানিয়েছেন- সেই ট্রলার থেকে চিহ্নিত চোর আরিফুর রহমান খোকনের পরিধিত পোশাক পাওয়া গেছে। এই খোকনের বিরুদ্ধে বিগত সময়ে গরু চুরির একাধিক মামলা রয়েছে।
সেক্ষেত্রে অনুমেয় যে খোকনই ট্রলার নিয়ে গরু চুরি করতে এসেছিল।কিন্তু বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে- চুরিতে ব্যবহৃত ট্রলার হারিয়েছে দাবি করে ভোলা থেকে ৩ ব্যক্তি থানায় ছুটে আসেন। তখন চুরি হওয়া গরু মালিকদের সন্দেহের ভিত্তিতে তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। অবশ্য পুলিশও প্রাথমিকভাবে বলেছিল এই তিনজনও গরু চুরির সাথে জড়িত। যে কারণে তাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে। নেওয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।কিন্তু পরবর্তীতে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার মধ্যস্ততায় বিষয়টি থানা পুলিশের সাথে সমঝোতায় হয়। পরিশেষে ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে ৩০ হাজার টাকা হাতে পেয়ে তাদের মুক্তি দেন ওসি ফয়সাল আহম্মেদ।’
তবে এখন ওসি বলছেন ট্রলার হারানো একটি সাধারণ ডায়েরি নিয়ে মালিক দাবি ভোলার ভেদুরিয়া গ্রামের কামালসহ ৩জন এসেছিলেন। কাগজপত্র বাচাই করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ট্রলারটির বিরুদ্ধে মামলা থাকার কারণে দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এমন বাস্তবতায় গরু মালিকদের দাবি- ট্রলার নিতে যে ৩জন এসেছিল তারাও চুরির সাথে জড়িত। যে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করার পরে টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দিয়েছেন।তাছাড়া মালিক দাবিদার কালাম ঘটনার রাত ২৬ ফেব্রুয়ারি ডায়েরি করলেও ট্রলার হারানোর দিনক্ষণ উল্লেখ করেছেন ৩ দিন আগে। এই বিষয়টি তাদের সাথে গরু চুরির সম্পৃক্তা থাকার সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এবং থানা পুলিশকেও প্রশ্নের মুখোমুখি নিয়ে আসছে।তবে এবার ওসি ফয়সাল বলছেন- মালিক দাবিদার কালামের নিয়ে আসা সাধারণ ডায়েরিটি তিনি ভাল করে দেখেননি। সেই সাথে তিনি অর্থ নেওয়ার বিষয়টিও পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।’এই বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি/দক্ষিণ) মোয়াজ্জেম হোসেন ভুঁইয়া বলেন- তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন। বিস্তারিত জেনে এই ঘটনারর প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা হায়দার রাজধানীতে অবস্থান করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।’’
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply