অনলাইন ডেস্ক ॥ স্ব্যাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান, ড্রেনেজ, স্যানিটেশন ও সুপেয় পানির অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে পটুয়াখালী পৌরসভার ১৭ হাজার প্রান্তিক জনগোষ্ঠি। এরা বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা থেকে। উপার্জন সংকট, অভাব-অনটন আর নোংরা পরিবেশে দুঃসহ জীবনযাপনের গ্লানি থেকে কিছুতেই মুক্তি মিলছে না।
অসহায় এসব জনগোষ্ঠীর বাসস্থান ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে গত ছয় মাস ধরে চালু হওয়া পটুয়াখালী পৌরসভার ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প’র কাজ চলছে জোরেশোরে।
সংশ্লিষ্টদের ধারনা, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এসব জনগোষ্ঠীর বাসস্থান ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। একই সাথে পটুয়াখালী পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন ও সকল শ্রেণীর নাগরিকদের সুযোগ সুবিধা সমানভাবে বৃদ্ধি পাবে।
জানাযায়, শত বছরের পুরনো পটুয়াখালী পৌরসভায় দেড় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। ২০১২ সালের হিসাব অনুযায়ী পনেরটি বস্তিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে ছয় হাজার মানুষ। আরো এগার হাজার মানুষ বিভিন্ন উপায়ে ভাসমান বা অস্থায়ী হিসাবে বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করছে। যার মধ্যে অধিকাংশ বাস্তুহারা।
সূত্র জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ব্যাপকতা ও তীব্রতা ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে কারণে সাগর বিধৌত এ জেলায় লবণাক্ততা, জলাবদ্ধতা ও নদীভাঙনের কারণে প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে।
এভাবেই ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডর পরবর্তি আইলা, নার্গিসসহ বেশ কয়েকটি বড় বড় ঘূর্নিঝড়ের শিকার হয়ে সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন এরা। যে কারণে ছিন্নমূল, ভূমিহীন ও বেকার মানুষ জীবিকার সন্ধানে প্রতিনিয়তই জেলার বিভিন্ন গ্রাম ছেড়ে পটুয়াখালী পৌর শহরে এসে মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে বস্তিসহ অন্যান্য স্থানে।
পটুয়াখালী পৌরসভার পনেরটি বস্তি বাসিদের সাথে কথাবলে জানাগেছে, পর্যাপ্ত টিউবয়েল না থাকায় সুপেয় খাবার পানি আর স্যানিটেশন সংকট প্রকট আকার ধারন করছে। বাসস্থানের অভাবে দুর্বিসহ জীবনযাপন করছেন তারা। বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষা স্বাস্থ্য সেবা থেকেও।
পটুয়াখালী পৌরসভার স্লাম ডেভেলভমেন্ট অফিসার ভবানি শংকর সিংহ জানান, পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়নসহ পৌরবাসীর (বস্তিবাসীসহ) জীবনমান উন্নয়নে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প নামের পাঁচ বছর মেয়াদি একটি প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান আছে। ইতিমধ্যে ওই প্রকল্পের আওতায় সম্পদ চিহ্নিত করণ, বেইজ লাইন সার্ভে এবং ওয়ার্ড ও মহল্লা মেপিং এর কাজ শেষ হয়েছে। বাকী কাজও দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বস্তিবাসীর জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষাবৃত্তি, পুষ্টিভাতা, বয়স্কভাতা, পরিত্যক্তভাতা এবং পুঁজির ব্যবস্থা করা হবে।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply