বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১:৩৭

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ

ঈদকে সামনে রেখে বরিশালে বিক্রি হচ্ছে নকল ও ভেজাল প্রসাধনী

dynamic-sidebar

এইচ আর হীরা : ঈদকে সামনে রেখে বরিশালে নকল ও মেয়াদ উত্তীর্ণ প্রসাধনী সামগ্রীতে সয়লাব হয়েছে বাজার। বিভিন্ন শো রুমের পাশাপাশি নগরীর ফুটপাতে পসরা সাজিয়ে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে এসব প্রসাধনী। নকল ও নিম্নমানের পণ্য কিনে ক্রেতারা প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি এসব প্রসাধনী ব্যবহারের কারণে মানুষের শরীরে সৃষ্টি হচ্ছে নানা রোগের। ক্রেতাদের কাছে যে পণ্যটির চাহিদা বেশি থাকে, সেটিই হুবহু নকল করে ফেলছে অসাধু এসব ব্যবসায়ী।

প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বিজ্ঞাপন দিয়ে ফুটপাতে বিক্রি হচ্ছে এসব প্রসাধনী। এসব ব্যবসায়ীর ওপর প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় ত্বকের ক্ষতিকারক কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি করা এসব প্রসাধনী বাজারজাত করতেও কোনো সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না। পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের ওপর স্টিকার লাগিয়ে কিংবা ঘষামাজা করে ঠকানো হচ্ছে ক্রেতাদের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর কাটপট্রি এলাকায় একটি চক্র এসব নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ প্রসাধনী নগরীতে ছড়িয়ে দেয়ার পেছনে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে এ ব্যবসা চলে আসলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তেমন কোনো অভিযান লক্ষ্য করা যায়নি।

সরেজমিন দেখা গেছে, ঈদকে সামনে রেখে নগরীর কাটপট্টি এলাকায় বিভিন্ন বড় বড় সাইনবোর্ড ব্যানার টাঙিয়ে ও সুন্দরী স্মার্ট যুবক-যুবতীদের দিয়ে ভালো ভালো কথার মাধ্যমে সাধারন ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে তাদের এই ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে,কাটপট্টি এলাকার তৃপ্তি কসমেটিক্স এবং সোনার কাকন নামক প্রসাধনী দোকানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের অরজিনাল পণ্যের সাথে তারা নকল ও মেয়াদউত্তীর্ণ প্রসাধনী বিক্রি করে থাকে ।

গত বছর এই দুই দোকানসহ কাটপট্টির বিভিন্ন প্রসাধনীর দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে তাদেরকে জরিমানা করা হয়েছিল। গত বছর জরিমানা করার পরে ঐ এলাকায় প্রশাসনের কোনো নজরদারী না থাকায় আবারো স্বরুপে চলে এসেছে কিছু অসাধু ব্যাবসায়ীরা। এরকম অভিযোগ শুধু কাটপট্টিতেই নয় অভিযোগ রয়েছে নগরীর বৃহত্তম শপিংমল গুলোর বিরুদ্ধেও। বিশ্বস্ত একটি সূত্র বলছে, নগরীর ইনিফিনিটি,উলফত প্লাজাসহ নগরীর বিভিন্ন শপিং মলে চলছে নকল ও ভেজাল প্রসাধনী বিক্রির ধুম। এছাড়াও নগরীর বিভিন্ন ব্যাস্ততম সড়কের ফুটপাতের ওপর পসড়া সাজিয়েও বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের নাম ভাঙিয়ে বডি স্প্রে, পারফিউম, ক্রিম, লোশন ইত্যাদি বিক্রি হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় কানিজ নামের এক নারী ক্রেতার সাথে তিনি বলেন,কিছুক্ষণ আগে একটি সান ক্রিম কিনেছি। যার গায়ে মূল্য লেখা আছে ২৪০ টাকা কিন্তু আমি আমার পরিচিত দোকান থেকে কিনেছি তাই ১২০ টাকা রেখেছে আমার কাছ থেকে।

এখন বিষয় হচ্ছে ২৪০ টাকা যেই পন্যের মূল্য দেয়া রয়েছে সেই পন্য কিভাবে তারা ১২০ টাকায় বিক্রি করে। অপরদিকে নগরীর ২৬ নং ওয়ার্ডের রিয়াজ নামের এক যুবকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,আমি বাসায় ব্যাবহারের জন্য একটি শ্যাম্পু কিনতে এসেছিলাম কিন্তু এক দোকানে একরকম দাম অন্য দোকানে দাম কম কিভাবে সম্ভব, তাই আর শ্যাম্পু কেনা হলোনা। কাটপট্রি এলাকার জাহিদ নামের এক ব্যবসায়ী জানান, যেসব প্রসাধনীর বেশি চাহিদা রয়েছে সেসব পণ্য দ্রুত নকল হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি নকল হচ্ছে বডি স্প্রে ও সুগন্ধি। এছাড়া নকলের তালিকায় রয়েছে ডাভ ও ইমপেরিয়াল ব্র্যান্ডের সাবান।

শ্যাম্পুর মধ্যে বেশি নকল হচ্ছে হেড অ্যান্ড শোল্ডার, লরেল, রেভলন ও পেনটিন। নকল হচ্ছে সানসিল্ক এবং ক্লিয়ার শ্যাম্পুও। প্রসাধনীগুলো নকল হয়ে যাওয়ায় অনেক সময় আসল নকল চেনা যায় না। ক্রেতারা ব্যবহারের পর অভিযোগ করছে। কিন্তু তখন কিছুই করার থাকে না। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে নকল প্রসাধনী ব্যবহারে ভোক্তারা শুধু আর্থিক ভাবেই নয়, শারীরিক ভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এসিড, মোম ও রাসায়নিকের কারণে ব্যবহারকারীদের নানা ধরনের চর্ম রোগ দেখা দিচ্ছে। এ সকল অসাধু ব্যবসায়ীদের জেল বা জরিমানা করে ছেড়ে দেয়ার পর তারা আবার একই কাজে ফিরে যান।

এ বিষয়ে বরিশাল প্রসাধনী ব্যাবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুল কাদের খান দৈনিক খবর বরিশালকে জানান, আমরা আমাদের প্রসাধনী সমিতির কমিটি গঠনের পূর্বে আমরা সবাইকে শপথ বাক্যের মাধ্যমে পাঠ করিয়ে নিয়েছিলাম যে, সমিতির কোনো সদস্য নকল ও ভেজাল কোনো প্রসাধনী বিক্রির সাথে সম্পৃক্ত থাকবেনা। এবং যদি কোনো ব্যাবসায়ী এরকম নকল প্রসাধনী বিক্রি করে তাহলে আমাদের কমিটির মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর বরিশালের সহকারি পরিচালক মোঃ শাহ সোয়েব মিয়া দৈনিক খবর বরিশালকে জানান, বরিশাল নগরীর যে কোনো স্থান থেকে কোনো ক্রেতা যদি নকল পন্য ও ভেজাল,মেয়াদউত্তীর্ণ পন্য ক্রয় করে প্রতারণার শিকার হয় তাহলে সেই ক্রেতা যদি আমদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে অবশ্যই আমরা সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে তাদের জরিমানা ও সতর্ক করা হয়।

এবং জরিমানার ২৫% অর্থ সেই ক্রেতাকে আমরা প্রদান করে থাকি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে বিএসটিআই নির্ধারিত ৫২পন্য নিষেধাজ্ঞা থাকার কারনে আমরা সেই পন্য গুলো বাজার থেকে মুক্ত করার উদ্যেশ্যে কাজ করে যাচ্ছি। তবে ঈদের পূর্বেই যেকোনো দিন শহরের বিভিন্ন প্রসাধনীর দোকানে অভিযান পরিচালনা করবো।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net