শনিবার, ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ১২:১০

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ

ঈদের আমেজ নেই বরগুনার জেলেদের মনে

dynamic-sidebar

বাবু সুমন চন্দ্রশীল :: কয়েক দিন পরই উদযাপিত হবে মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। এই ঈদকে ঘিরে বরগুনাসহ উপকূলীয় জেলে পরিবারগুলোতে কোনও আমেজ নেই। সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরার ওপরে নিষেধাজ্ঞা থাকায় জেলে পরিবারগুলো বিপাকে পড়েছে। জেলেরা জানান, ঈদের দিনটিতেও ভালো-মন্দ খাওয়ার সুযোগ হবে না তাদের। ছেলেমেয়েদের গায়েও উঠবে না নতুন জামা-কাপড়। তবে জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, জেলেদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই; বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে তাদের মাঝে চাল বিতরণ করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরগুনা সদর উপজেলার নলী, বড়ইতলা ও পোটকাখালী এবং পাথরঘাটা উপজেলার দক্ষিণ পাথরঘাটা, চরদুয়ানী, চরলাঠিমারা, গোড়াপদ্মাসহ বিভিন্ন এলাকার জেলেপল্লির জেলেরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ নতুন জাল সেলাই করছেন, কেউ কেউ পুরনো জাল মেরামত করছেন, কেউবা ট্রলার মেরামত করছেন।
এসব এলাকার বেশিরভাগ জেলে বঙ্গোপসাগরে ট্রলার নিয়ে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। মাছ শিকার বন্ধ থাকায় ঈদকে সামনে রেখে তাদের পরিবারগুলোতে হতাশা বিরাজ করছে। অধিকাংশ জেলে পরিবারই ধারদেনা করে চলছে।

পাথরঘাটা উপজেলার দক্ষিণ পাথরঘাটা এলাকায় আবুল, ফারুক, মহিউদ্দিনসহ একাধিক জেলের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তারা জানান, প্রতিবছর শিকারের মৌসুমে যে মাছ আহরণ করেন তার একটা অংশ পান তারা, একটা অংশ পান ট্রলার মালিক ও আরেকটা অংশ পান আড়তদার। মাছ শিকার বন্ধ থাকায় তাদের সবারই করুণ দশা। সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থা জেলেদের। মাছ ধরা বন্ধ মানে তাদের রোজগারের পথ বন্ধ।

একই উপজেরার চরলাঠিমারা এলাকার জেলে সোবাহান হাওলাদার বলেন, ‘ঘরে চাল ছিল না। ধারদেনা করে কোনোমতে চাল কিনে পরিবার-পরিজনের খাওয়ার ব্যবস্থা করছি। এবছর ঈদ আমাদের জন্য নয়। বছরে একবার ঈদে ছেলেমেয়েদের নতুন জামা কিনে দিই। এবার তাও দিতে পারিনি।’

বরগুনা জেলা ট্রলার ফিশিং বোট মালিক সমিতির সভাপতি আবু হেনা মো. ইমরুল কায়েস বলেন, ‘লাখ টাকা দিয়ে আমরা এক একটি ট্রলার নির্মাণ করি। সারাবছর কোনোমতে টেনেটুনে চলে যায়। আশায় থাকি, কখন ইলিশ মৌসুম শুরু হবে। এবছর ইলিশ মৌসুমেই সরকার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এই অবস্থায় লাখ টাকা বিনোয়োগ করে এখন আমরা বিপাকে পড়েছি।’ মাছ শিকারে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার দাবি জানান তিনি।
জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল খালেক দফাদার বলেন, ‘ঈদুল ফিতর ঘিরে বরগুনাসহ উপকূলের জেলে পরিবারগুলোতে উৎসবের আমেজ শুরু হয়। কিন্তু এবছর সরকার মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় হতাশা বিরাজ করছে।’

জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, বরগুনায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৭ হাজার ৪শ’ ৪০ জন। কিন্তু সব মিলিয়ে এ জেলায় প্রায় একলাখ জেলে আছেন। মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চলাকালে প্রতি মাসে প্রত্যেক নিবন্ধিত জেলে পরিবারকে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। তবে নিবন্ধিত জেলেদের মধ্যে ৭ হাজার ৬৪০ জন জেলে এখনও কোনও সহযোগিতার আওতায় আসেনি। এ ছাড়া, অনিবন্ধিত জেলেরাও সহযোগিতার আওতায় নেই।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘জেলেদের জন্য বিভিন্ন সময় যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে এবার সর্বোচ্চটা দেওয়া হয়েছে।’ জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন, ‘চাল বিতরণ করা হচ্ছে। জেলেদের ঈদ আনন্দময় হবে।’
প্রসঙ্গত, ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে সব ধরনের মাছ ধরায় ব্যবহৃত যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। তবে এ নিষেধাজ্ঞা চলার সময় স্থানীয় নদ-নদী থেকে জেলেরা মাছ ধরতে পারবেন।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net