গত ২৩শে মে বরিশালের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল “দৈনিক খবর বরিশাল২৪ ডট কম” পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরে নগরীর বিভিন্ন শপিং মল গুলোতে ভ্রান্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে জরিমানা করা হয়।আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে নিয়মিত বাজার মনিটরিং এর অংশ হিসেবে নগরের শপিংমল গুলোতে মোবাইল কোর্টের অভিযান চলছে। গতকাল ১ জুন সকাল ১১ টার দিকে জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরিশাল এর সার্বিক নির্দেশনায় বরিশাল নগরীর গীর্জামহল্লা এলাকায় বিপনি-বিতান গুলোতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। শপিং কমপ্লেক্সে অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট উর্মি ভৌমিক।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাইফুল ইসলাম। শুরুতেই স্মার্ট ফ্যাশন নামের একটি দোকানে অভিযানকালে ম্যাজিস্ট্রেট বিভিন্ন ধরনের অসংগতি খুঁজে পায় আমদানী করা কাপড়ের বৈধ কাগজ পত্রে না থাকা। ১৫০০ টাকায় কেনা পণ্য বিক্রি করতে দেখা যায় ৩ হাজার টাকা। ভ্রাম্যমাণ আদালত শপিং কমপ্লেক্সের কয়েকটি দোকানে অভিযান পরিচালনা করে সরকারের নির্দেশনামতে পন্য বিক্রয়ের মূল্য তালিকা না থাকা, আমদানী করা কাপড়ের বৈধ কাগজ পত্র না থাকাসহ ক্রেতা ঠকানোর নানা অসংগিত আমলে আনে। এসব অভিযোগে দায়িত্ব অবহেলা ইত্যাদি কারনে প্রাথমিক ভাবে সতর্কতার পাশাপাশি জরিমানা আদায় করা হয়।
এসময় নগরীর গীর্জামহল্লা এলাকায় কয়েকটি দোকানে অভিযান চালিয়ে পোশাকের ক্রয়মূল্যর চেয়ে অধিক মূল্য পোশাক বিক্রয় করা, আমদানী করা কাপড়ের বৈধ কাগজ পত্র না থাকা, ক্রয়ের ৫৪% অধিক মূল্যে কাপড় বিক্রি করা ইত্যাদি কারণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪০ এবং ৩৯ ধারায় কৃত অপরাধে চারটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়। তার হলেন স্মার্ট ফ্যাশন এর ম্যানেজার মোঃ মিজানুর রহমান করে ৫,০০০ হাজার টাকা জরিমানা, বৈশাখী শেরুক এর ম্যানেজার মোঃ নুরুজ্জামান কে ১০,০০০ হাজার টাকা জরিমানা, পিটার ইংল্যান্ড এর ম্যানেজার মোঃ আবদুল কাদের কে ১০,০০০ হাজার টাকা জরিমানা, নেক্সট প্লাস এর ম্যানেজার রতন চৌধুরী কে ১৫,০০০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এসময় প্রসিকিউশন প্রদান করেন র্যাব-৮ এর এসআই। অভিযানে চারটি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৪০,০০০/- (চল্লিশ হাজার) টাকা অর্থ জরিমানা আদায় করা হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করেন এএসপি দেবাশীষ কর্মকার ও
র্যাব-৮ এর সদস্যরা। এই অভিযান জনস্বার্থে অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট।
উল্যেক্ষ্য গত ২৩শে মে ২০১৯ তারিখে বরিশালে ঈদকে পূজি করে ক্রেতাদের গলা কাটছে নগরীর পোশাক ব্যাবসায়ীরা : প্রশানের হস্তক্ষেপ কামনা এই শিরনামে প্রকাশিত সংবাদটি তুলে ধরা হলো। রমজান শুরু থেকে খাদ্যের উপর চড়া অভিযানে নেমেছে ভোক্তা সংরক্ষন অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন। প্রতিদিনই চলছে তাদের ভেজাল বিরোধী অভিযান। কিন্তু জরিমানা দিয়ে তা আবার উশল করে নেয় দোকান মালিক। নগরীর অনেক স্থানে ভেজাল বিরোধী অভিযানের ফলে অনেকটাই সচেতন হয়ে পড়েছে সাধারন বিক্রেতারা।
কিন্তু সবার দৃষ্টি থাকে সেদিকেই। এদিকে ক্রেতাদের গলা কাটছে নগরীর ভিআইপি শপিংমল ও ভিআইপি মার্কেট গুলোতে। বিগত বছর গুলোতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিপনি বিতান গুলোতে অভিযান পরিচালনা করেছিলো। বরিশালের সাবেক জেলা প্রশাসক গাজী মোঃ সাইফুজ্জামান এর সময় বরিশাল সমস্যা ও সম্ভাবনার ফেইজবুক গ্রুপে অনেকেই বেশি দাম নিয়ে পোষ্ট দিলে বিষয়টি নজরে আসে তার।
তবে আসলেই সবার দৃষ্টি দেয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন নগরীর সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেন, একটি কাপড় বা থ্রিপিচ কম দামে ক্রয় করে দামী ব্যান্ডের স্টিকার ব্যবহার করে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছে। আসলে আমরা কেউ খুজতে যাই না কোন পন্যর কি দাম। সচেতন মহল জানান, আসলে এখানে জেলা প্রশাসনের অভিযান দেয়া দরকার। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এদের শাস্তির আওতায় আনলে নগরীর খেটে খাওয়া মানুষের জন্য এই ঈদে পরিবারের জন্য কিছু ক্রয় করতে পারবে বলেও মনে করেন তারা।
নগরীর বিভিন্ন ভিআইপি শপিংমল গুলো ঘুরে দেখা গেছে নিম্মমানের পোষাাক দামী ব্রান্ডের ষ্টিকার ব্যবহার করে অতিরিক্তি দামে বিক্রি করছে। কথা বেশ কয়েক দোকানের ম্যানেজারের সাথে তারা জানান, এই দোকানে অনেক টাকা জামানত দেয়া আছে। অনেক কর্মচারী কাজ করছে অনেক টাকা লাইট বিল হয় এসব টাকা এই পোষাক থেকেই উত্তোলন করতে হবে। তা না হলে কিভাবে দোকান চালাবো। গতকাল শপিংমল ঘুরে দেখা গেছে পোষাক এর দোকানে নিম্নমানের পোষাকের গায়ে বিভিন্ন ব্রান্ডের ষ্টিকার সাটিয়ে অতিরিক্ত দাম নিচ্ছে বিক্রয় প্রতিষ্ঠান ।
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, নগরীর প্রানকেন্দ্র বিবির পুকুর পাড় সংলগ্ন ফাতেমা সেন্টারে গেলে দেখা যায়, কয়েকটি পোষাক দোকানে ঢাকা থেকে নিম্নমানের পোষাক ক্রয় করে বরিশালে নিয়ে এসে তারা তাদের দোকানের স্টিকার সাটিয়ে চড়াও মূল্যের সিল দিয়ে পোষাকের উপরে টানিয়ে দেয়। এর মধ্যে দেখা গেছে, ধুলিয়া ফ্যাশন হাউজ , রিচম্যান, চন্দ্রবিন্দু,পোষাক বাজার সহ বেশ কয়েকটি দোকানে এমন চিত্র লক্ষ করা গেছে। অন্যদিকে নগরীর গির্জা মহল্লা ও চকবাজার এলাকার বেবিলন, বৈশাখী, নেক্সট প্লাসসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানেই একই কাজ করছে তারা ।
তবে সবার দাবী জেলা প্রশাসন যাতে করে ভেজাল বিরোধী অভিযানের মতোই পোশাকের দোকানেও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করেন। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় বরিশাল জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমানের সাথে তিনি জানান আমরা অচিরেই এসব অভিযাত দোকান গুলোতে অভিযান পরিচালনা করবো।
অপরদিকে এসব দোকানে মূল ম্যামোর সাথে ষ্টিকার এর দামের সাথে মিল হবেনা এমনটাই জানালেন পোষাক কিনতে আসা লিমা আক্তার। তিনি আরো বলেন, বর্তমান মার্কেটে সবচেয়ে বেশি দাম হচ্ছে ভারতীয় চ্যানেলের বিভিন্ন নাটকের নাম করন পোষাক।এবারের ঈদের বাজারে বেশি কদর রয়েছে পরকীয়া নামের পোষাকটির। গতবারের তুলনায় এবারের ঈদে অনেক বেশি দাম রাখছে দোকান ব্যাবসায়ীরা।
চকবাজারে গেলে কথা হয় সোনিয়া নামের আরেক নারী ক্রেতার সাথে তিনি জানান, অনেক দোকানে নিম্মমানের পোষাক রয়েছে কিন্তু বিভিন্ন ষ্টিকার দিয়ে অতিরিক্ত দাম হাকিয়ে রেখেছে। এসব কারনেই অনেকটাই হিমশিম খাচ্ছে সাধারন ক্রেতারা।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply