বৃহস্পতিবার, ১৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৪:১৯

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ

বরিশালে মাসোয়ারা দিয়ে চলছে ভয়ঙ্কর থ্রি-হুইলার

dynamic-sidebar

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নগরীসহ জেলার সর্বত্র সড়ক ও মহাসড়কে পাল্লা দিয়ে অবৈধ যানবাহন থ্রি-হুইলার, মাহেন্দ্রা, ইজিবাইক, ভটভটি নসিমন, করিমন ও হালচাষ করা ট্রাক্টর দিয়ে তৈরিকৃত যানবাহন চলাচল করলেও সেদিকে নজর নেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের। শুধু মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে অভিযান করেই ক্ষ্যান্ত থাকেন ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা। ফিটনেসবিহীন অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে শুধু মোটরসাইকেল চালকদের হয়রানি করায় জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, নগরীসহ জেলার সড়ক ও মহাসড়কে চলাচল করা অবৈধ থ্রি-হুইলার যানবাহন থেকে টোকেন বাণিজ্যের মাধ্যমে মাসে লাখ লাখ টাকার চাঁদা পকেটে আসে ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তাদের। আর মোটরসাইকেল চালকদের কাছ থেকে মাসোহারা না পাওয়ায় কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও কারণে অকারণে সামান্য ত্রুটি ধরে মামলা অথবা উৎকোচ নিয়ে থাকেন সংশ্লিষ্ট অফিসাররা। এ নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই একাধিক স্থানে ট্রাফিক সার্জেন্টদের সঙ্গে মোটরসাইকেল চালকদের বাগ্বিত-ার খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টি বিএমপি পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা অবহিত হলেও তারা ততটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না বলে দাবি করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী। যে কারণে ট্রাফিক সার্জেন্টরা ক্রমেই বেপরোয়া হয়ে উঠছেন।

নগরীর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকার বাসিন্দা শফিকুল মাতুব্বর জানান, চলতি মাসের প্রথমার্ধে চৌমাথা এলাকায় এক মোটরসাইকেল চালকের সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশের তুমুল বাগ্বিত-া বাঁধে। পরে স্পটে গিয়ে জানতে পারি ট্রাফিক পুলিশের ওই সার্জেন্ট মোটরসাইকেল চালকের কাছে কাগজপত্র দেখতে চায়। চালক কাগজপত্র দেখানো সত্ত্বেও ওই সার্জেন্ট তার কাছে দুই হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করেন। মোটরসাইকেল চালক তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে দু’জনের মধ্যে বাগ্বিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে বিষয়টি শুনে ওই ট্রাফিক সার্জেন্টকে গণধোলাই দেয়। ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত সটকে পড়ে প্রাণরক্ষা করেন ওই ট্রাফিক সার্জেন্ট। নগরীর গোরস্তান রোড এলাকার বাসিন্দা নাসির উদ্দিন জানান, ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ নতুন নয়। আমিও একবার ভোগান্তির শিকার হয়েছি। তবে সেই সময় একজন টিআই আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করলেও উপস্থিত জনসাধারণের কারণে সে (টিআই) সফল হতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, ট্রাফিক পুলিশসহ অন্য আইন- শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখের সামনে দিয়ে অবৈধ যানবাহন বীরদর্পে ঘুরে বেড়ালেও তার বিরুদ্ধে কারও কোন অভিযান নেই। উল্টো মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখার নামে চাঁদাবাজিতে মেতে উঠেছেন ট্রাফিক পুলিশ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মাহিন্দ্রা ও ইজিবাইক চালক জানান, তারা প্রতিমাসে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মাসোহারা দিয়ে টোকেন নিয়ে গাড়ির সামনে ঝুলিয়ে রেখে সড়ক ও মহাসড়কে তাদের যানবাহন পরিচালনা করছেন। ফলে তাদের যাত্রী ও মালামাল পরিবহনে ট্রাফিক পুলিশসহ অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কোন বাঁধার সৃষ্টি করছেন না।

কাজী আল-আমিন নামের এক মোটরসাইকেল চালক জানান, ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ তার গাড়ির সকল কাজগপত্র রয়েছে। শুধু ইন্স্যুরেন্সের কাগজ নেই। এজন্য বরিশাল পুলিশ রেঞ্জের এক ট্রাফিক সার্জেন্টের সঙ্গে তার তুমুল বাগ্বিতন্ডা হয়েছে। প্রশ্ন রেখে কাজী আল-আমিন বলেন, একটি ইন্স্যুরেন্স করতে লাগে ১২০ টাকা। তাও সরকারী কোন প্রতিষ্ঠান থেকে নয়; একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে করতে হয়। এ ইন্স্যুরেন্সের কাজ কি? তা তিনি ওই ট্রাফিক সার্জেন্টের কাছে জানতে চাইলেও তিনি (সার্জেন্ট) কোন সদুত্তর না দিয়ে শুধু বলেন মোটরসাইকেলের ইন্স্যুরেন্স না থাকায় দুই হাজার টাকা জরিমানা করার বিধান রয়েছে। কাজী আল-আমিন বলেন, গাড়ির কোন ক্ষয়ক্ষতি কিংবা দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক মারা গেলেও ওই ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে কোন খোঁজখবর বা ক্ষতিপূরণ দেয়া হচ্ছেনা। তাহলে নামেমাত্র ওই ইন্স্যুরেন্সের নামে চালকদের কেন আর্থিক ও মানসিকভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

মোটরসাইকেল চালকদের হয়রানির বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) খায়রুল আলম বলেন, বিষয়টি আমি এই প্রথম শুনেছি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বা এ বিষয়ে কোন প্রমাণ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সাহাবুদ্দিন খান বলেন, বিষয়টির খোঁজখবর নিয়ে অভিযুক্ত অফিসারদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন বরিশাল জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী এনায়েত হোসেন বলেন, পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে টোকেন নিয়ে নগরীতে অনেক যানবাহন অবৈধভাবে চলাচল করছে। এরমধ্যে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক (হলুদ অটো), গ্যাসচালিত অটো (নীল অটো) ও মাহিন্দ্রা রয়েছে। এসব অবৈধ যানের বিরুদ্ধে অভিযান না চললেও পাড়া-মহল্লার মোড়ে মোড়ে প্রতিদিনই মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। এর কারণ হচ্ছে মোটরসাইকেল চালকদের কোন ইউনিটি বা সমিতি নেই, যে তারা আন্দোলন করবে। তাই ব্যক্তিপর্যায়ে চাপ দিয়ে আর্থিক সুবিধা নিতেই ট্রাফিক পুলিশ নানা অজুহাতে কাগজপত্র দেখার নামে অর্থবাণিজ্যের জন্য অভিযান পরিচালনা করে আসছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তারা জেনেও না জানার ভ্যান করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net