বরগুনা প্রতিনিধি : বরগুনায় প্রকাশ্যে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার প্রধান আসামি বন্দুকযুদ্ধে নিহত নয়ন বন্ডের মরদেহ দেখতে হাসপাতাল মর্গে ঢল নেমেছে সাধারণ মানুষের ঢল । সেই ঢল সামলাতে বেগ পেতে হচ্ছে পুলিশকেও। পরে লাইনে দাঁড় করে কয়েক হাজার সাধারণ মানুষকে নয়ন বন্ডের মরদেহ দেখার সুযোগ করে দেয় পুলিশ। এ সময় নয়ন বন্ডের মরদেহ দেখতে আসা সাধারণ মানুষের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
এদিকে মঙ্গলবার ভোররাতে বন্দুকযুদ্ধে নয়নের মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরপরই বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গ ও এর আশপাশ এলাকায় অবস্থান নেয় উৎসুক সাধারণ মানুষ। পরে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাস্থল থেকে সকাল ৭টার দিকে নয়ন বন্ডের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে আসে পুলিশ। সেই থেকে দুপুর পর্যন্ত নারী-পুরুষসহ কয়েক হাজার মানুষ নয়ন বন্ডের মরদেহ দেখেছে বলে জানিয়েছে মর্গ প্রাঙ্গণ দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফ নামের এক তরুণকে। এ সময় বরগুনা সরকারি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি তার স্বামীকে রক্ষার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালান। কিন্তু সন্ত্রাসীরা রিফাতকে উপর্যুপরি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। বিকেল তিনটার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফাতের মৃত্যু হয়। জনবহুল এলাকায় এমন নৃশংস হামলার ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভের ঝড় ওঠে।
পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে নিহত রিফাতের বাবা বরগুনা সদরের বড় লবণগোলার বাসিন্দা আবদুল হালিম শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় বরগুনা শহরে চিহ্নিত সন্ত্রাসী সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড এবং তার সহযোগী রিফাত ফরাজী ও তার ছোট ভাই রিশান ফরাজীসহ ১২ জনকে আসামি এবং আরও চার থেকে পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
এ মামলায় সোমবার পর্যন্ত নয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে চন্দন (২১), মো. হাসান (১৯), অলিউল্লাহ (২২) টিকটক হৃদয় (২১) এজাহারভুক্ত আসামি। ঘটনার পরের দিন সকালে চন্দনকে, সন্ধ্যার মো. হাসান গ্রেফতার করা হয়। রোববার বরগুনা থেকে অলিউল্লাকে (২২) এবং ঢাকা থেকে টিকটক হৃদয়কে (২১) গ্রেফতার করা হয়। অন্য পাঁচজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলেন নাজমুল ইসলাম (১৮), সাগর (১৯), তানভীর (২২), কামরুল হাসান ওরফে সাইমুন (২১)। অপর একজনের নাম পুলিশ প্রকাশ করেনি।
সোমবার বিকেলে এই মামলায় গ্রেফতার দুই আসামি অলিউল্লাহ ওরফে অলি ও তানভীর হোসেন ১৬৪ ধারায় বরগুনার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বিকেলে বরগুনার বিচারিক হাকিম সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে ওই দুই আসামিকে উপস্থিত করে তাদের দুজনের এই জবানবন্দি নেওয়া হয়। অলিউল্লাহ রিফাত হত্যা মামলার ১১ নম্বর আসামি তাকে রোববার গ্রেফতার হয়। অপর আসামি তানভীর সন্দেহভাজন আসামি। সে মূল আসামি নয়ন বন্ডের সন্ত্রাসী দল ০০৭-এর সক্রিয় সদস্য।
তবে মামলা প্রধান আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলেও প্রধান অপর দুই আসামি রিফাত ফরাজী ও তার ছোট ভাই রিশান ফরাজী এখনো পলাতক।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply