অনলাইন ডেস্ক ॥ প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামের বাড়ি ফিরছে মানুষ। ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ বাড়ায় দেশের সড়ক, নৌ এবং ট্রেন তিন রুটেই বেড়েছে যাত্রী ভোগান্তি।
নির্ধারিত সময়ের আগে কাউন্টারে পৌঁছানো গেলেও বাসেরই সন্ধান নেই। যারা আগাম টিকেট নেননি তাদেরকে আবার গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। এতসব ভোগান্তি মেনেও প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছাড়ছে মানুষজন।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) ভোর থেকেই সায়দাবাদ, গাবতলীতে বাস টার্মিনাল ও সদরঘাটে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে। কিন্তু সেখানে যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া নিতে দেখা গেছে। টার্মিনালে লোকাল ও গেটলক বাসগুলোতে সবচেয়ে বেশি ভিড়। গাড়ি ধরতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে মানুষ। মানুষের ঢলের সুযোগে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরাও নির্ধারিত ভাড়ার চার্টের বাইরে নিচ্ছেন অতিরিক্ত ভাড়া।
গাবতলীতে গিয়ে দেখা গেছে, বাস কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেট করে স্বাভাবিক ভাড়ার থেকে দুই গুণ বেশি ভাড়া আদায় করছে।
কথা হয় গাবতলী থেকে পাটুরিয়া রুটে চলাচলকারী পদ্মা লাইন বাসের যাত্রী কামরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘একশত টাকার ভাড়া চারশত টাকা দিতে হচ্ছে। এগুলো দেখার কেউ নেই। কী আর করব, বাড়ি তো যেতেই হবে।’
একই রুটে চলাচলকারী নীলাচল পরিবহনকেও একশত টাকার জায়গায় চারশত টাকা আদায় করতে দেখা গেছে। এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয়ে লোকাল বাসগুলোও বেশি ভাড়া নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
সিলভার লাইন নামে একটি লোকাল পরিবহনকে পাবনাগামী যাত্রীদের কাছ থেকে তিনশত টাকার জায়গায় একহাজার টাকা করে ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে। যাওয়ার অন্য উপায় না পেয়ে সিলভার লাইনে উঠেছেন জাহাঙ্গীর আলম নামে এক রাজমিস্ত্রী। তিনি বাসের কন্ডাক্টরকে অনুরোধ করে বলেন, ‘ভাই আমি গরিব মানুষ। ভাড়াটা একটু কম নেন।’
কিন্তু ভাড়া কম নিতে নারাজ বাসের কন্ডাক্টর। তিনি বলেন, ‘এক হাজার টাকার এক পয়সাও কম নিতে পারব না। ভাড়া দিতে না পারলে নেমে যান।’ নিরুপায় হয়ে জাহাঙ্গীর এক হাজার নোট বাড়িয়ে দেন।
রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালেও দেখা গেছে একই চিত্র। ‘সায়দাবাদ বাস টার্মিনালের দূরপাল্লার পরিবহন কাউন্টারগুলোতে নিয়মানুযায়ী টিকেটের মূল্য তালিকা দৃশ্যমান স্থানে ঝুলানোর কথা থাকলেও তা দেখা যায়নি। টিকেটের দাম অতিরিক্ত নিচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
এদিকে, বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকা-বরিশাল নৌ-রুটের লঞ্চসহ অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চগুলো ২০ ভাগ ভাড়া বাড়িয়েছে। যদিও লঞ্চ মালিকদের দাবি ভাড়া বাড়ানো হয়নি। ঈদ উপলক্ষে সরকারি রেট কার্যকর করা হচ্ছে মাত্র। অপরদিকে জীবনহানির ঝুঁকিও বাড়ছে। ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ-তিনগুণ বেশি যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ঘাট ছাড়লেও বিআইডব্লিইটিএ কর্তৃপক্ষ নীরব ভূমিকা পালন করছে।
জানা গেছে, সারাবছর রাজধানী থেকে দক্ষিণাঞ্চলগামী লঞ্চগুলোয় ডেকের ভাড়া ২০০ টাকা নেয়া হয়। আর সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া ৯০০ এবং ডাবল কেবিন ১৮০০ টাকা নেয়া হয়। ভিআইপি কেবিনের ভাড়া প্রকারভেদে তিন-পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। কিন্তু ঈদ এলেই সরকার নির্ধারিত ভাড়ার অজুহাত তুলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়।
এবারও সরকার নির্ধারিত রেটের অজুহাতে বৃহস্পতিবার থেকে ঈদ স্পেশাল সার্ভিসে ডেকের ভাড়া ২৫০ টাকা, সিঙ্গেল (এসি/নন-এসি) ১১০০ এবং ডাবল (এসি/নন-এসি) ২২০০ টাকা এবং ভিআইপি কেবিনের ভাড়া ৬-৭ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply