বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ২:২২

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ

৩০ বছর ধরে একই ব্যাক্তির নিয়ন্ত্রণে বরিশালের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর! 

dynamic-sidebar

রাহাত খান :বরিশালের স্বাস্থ্য খাতের সিন্ডিকেট এখনও সক্রিয়। গত ৩০ বছর ধরে বরিশালের একজন ব্যক্তি ও তার স্ত্রী-সন্তানের নামে ৪টি লাইনেন্সে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বিভাগের ৬ জেলার সিভিল সার্জন অফিস সহ স্বাস্থ্যখাতের যাবতীয় কেনাকাটা। বিএনপি কিংবা আওয়ামী লীগ যে দলই ক্ষমতায় থাকুক তার সিন্ডিকেট অক্ষত। বিএনপি ক্ষমতামলে বিভাগের ৬ জেলা ও মহানগর বিএনপি’র নীতিনির্ধারক এবং বর্তমান সরকারের ক্ষমতামলে স্ব-স্ব জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে মোটা অংকের পার্সেন্টেজ দিয়ে স্বাস্থ্যখাতের যাবতীয় টেন্ডার বাগিয়ে নিচ্ছেন নিজের এবং স্ত্রী ও সন্তানের ৪টি লাইসেন্সে। পার্সেন্টেজের বিনিময়ে সিভিল সার্জন সহ সংশ্লিস্ট হিসাবরক্ষকরাও তার ঘনিস্ট সহযোগী। সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় হলেও এর কোন প্রভাব পড়েনি বরিশালে।

চলতি অর্থ বছরে এ পর্যন্ত ঝালকাঠি, পটুয়াখালী এবং বরিশাল সিভিল সার্জন অফিসের চিকিৎসা সরঞ্জামাদী (এমএসআর) সরবরাহের অন্তত ১০ কোটি টাকার উন্মুক্ত দরপত্রও ওই চক্রের গ্রাসে। ব্যাংকে সরকারি চালানের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়েও ঝালকাঠি ও পটুয়াখালী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমএসআর সরবরাহের দরপত্র আনতে পারেননি আগ্রহীরা। বরিশাল সিভিল সার্জন কার্যালয়ে উন্মুক্ত টেন্ডারের দরপত্র আনতে গেলেও ওই অফিসের হিসাব রক্ষক মুন্নী বেগমের বিরুদ্ধে নানা টালবাহানার অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরিশালের ওষুধ ব্যবসায়ী এসকে পিপলাই নামে এক ব্যক্তি তার নিজের নামে দুটি আহসান ব্রাসার্দ ও পিপলাই এন্টারপ্রাইজ, ছেলের নামে বাপ্পী ইন্ট্যারন্যাশনাল এবং স্ত্রীর নামে মুন্নী এন্টারপ্রাইজ নামে মোট ৪টি লাইসেন্সের অধিকারী। গত ৩০ বছর ধরে একই ব্যক্তির ৪টি প্রতিষ্ঠান একতরফাভাবে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় ও তাদের আওতাধীন সকল কেনাকাটা টেন্ডার নিয়ন্ত্রন করছেন। সংশ্লিস্ট অফিসগুলোর হিবাস রক্ষক ও প্রধান ব্যক্তি (সিভিল সার্জন) ছাড়াও স্ব-স্ব জেলার ক্ষমতাসীনদের মোটা অংকের পার্সেন্টেজ দিয়ে বাগিয়ে নিচ্ছেন কেনাকাটার সব টেন্ডার। প্রতিযোগীতামূলক টেন্ডার হলেও ওই ব্যক্তি সিভিল সার্জন অফিসগুলোতে সমদরে (এজপার) কাজ নিয়ে সবাইকে অবাক করে দিচ্ছেন।

৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতামল থেকে শুরু হয় তার একতরফা সিন্ডিকেট। ওই সময় থেকে যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে সেই দলের প্রভাবশালীদের মোটা অংকে ম্যানেজ করে এককভাবে টেন্ডার বাগিয়ে নেন তিনি।

গত অর্থ বছরেও বরিশাল বিভাগের ৬ জেলা সদর হাসপাতালের কোটি কোটি টাকার টেন্ডার বাগিয়ে নেন এসকে পিপলাই। দরপত্র আহ্বান করলেই স্ব-স্ব জেলার ক্ষমতাসীনদের মোটা অংকে ম্যানেজ করে তাকে ব্যতিত অন্য কোন আগ্রহীকে দরপত্র দেয়ার প্রক্রিয়া আটকে দেন তিনি।

সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ে দেশে তোলপাড় হলেও বরিশালের এসকে পিপলাই সিন্ডিকট অক্ষত। চলতি অর্থ বছরেও স্বাস্থ্যখাতের সব টেন্ডার বাগিয়ে নিতে তৎপর তিনি।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আহ্বান করা এমএসআর সরবরাহের দরপত্র আনতে গত ৮ অক্টোবর সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে সিভিল সার্জন অফিসে গিয়েছিলেন আব্দুল হালিম নামে একজন ঠিকাদার। হিসাব রক্ষক জহিরউদ্দিন তাকে দরপত্র না দিয়ে ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের এক নীতিনির্ধারকের সাথে মুঠোফোনে কথা বলিয়ে দেন। ওই নেতা তাকে বাসায় ডেকে নিয়ে এবারের টেন্ডারটি বরিশালের এক ঠিকাদারের জন্য (এস কে পিপলাই) নির্ধারিত বলে তাকে দরপত্র দেয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেন।

একইভাবে পটুয়াখালীর সদর হাসপাতালের এমএসআর সরবরাহের টেন্ডারও স্থানীয় নীতিনির্ধারকদের ম্যানেজ করে বাগিয়ে নেয়ার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন ৪ লাইসেন্সের সত্ত্বাধিকারী এসকে পিপলাই। বরিশাল সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অধিন সদর হাসপাতালের এমএসআর সরবরাহের টেন্ডার বাগিয়ে নিতেও তৎপর তিনি।

জানতে চাইলে এস কে পিপলাই মুঠোফোনে বলেন, ১৯৮৬ সাল থেকে তিনি পুলিশের এবং ৮৮ সাল থেকে স্বাস্থ্যখাতে এমএসআর সরবরাহের ব্যবসা করেন। এখন বরিশাল বিভাগ ছাড়াও খুলনা বিভাগের ৪টি জেলায় এমএসআর সরবরাহের ব্যবসা আছে তার। কাজের প্রয়োজনেই নিজের দুটি ছাড়াও স্ত্রী ও সন্তানদের নামে লাইসেন্স করেছেন। তিনি বলেন, আমার চেয়ে সৎভাবে ব্যবসা করে এমন একটা লোক দেশে পাবেন না। যারা স্বাস্থ্যখাতে টেন্ডারে অংশগ্রহন করেন তাদের কাগজপত্র সঠিক নেই। এ কারনেই তিনি তার ৪টি লাইসেন্সে কাজ পেয়ে যান। এতে সিন্ডিকেটের কিছু নেই।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস বলেন, বরিশালের স্বাস্থ্যখাতের কেনাকাটা নিয়ে আমাকে কেউ কোন দিন প্রশ্ন করেনি। ওসব বিষয় আমার নলেজেও নেই। সিভিল সার্জনরা টেন্ডারের মাধ্যমে কেনাকাটা করে থাকেন। পরিচালক কার্যালয় কোন টেন্ডারের সাথে জড়িত নয়। স্বাস্থ্যখাতের কেনাকাটায় সিন্ডিকেটের কোন অভিযোগ আসলে তদন্ত করে দেখবো কিভাবে কোথায় কি হয়।
সূত্র : স্টাফ রির্পোটার, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net