খবর বরিশাল ডেস্ক \\ বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে (শেবামেক)শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ৭ গণমাধ্যমকর্মীর ওপর হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. আবুল বাশারসহ দুই শিক্ষকের নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা। শনিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পরপরই কলেজের সামনে অবস্থান নিয়ে ঘটনার বিচার দাবি করেছেন সাংবাদিকরা। হামলার শিকার সাংবাদিকরা হলেন, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের বরিশাল ব্যুরো প্রধান কাওছার হোসেন রানা, ক্যামেরা পারসন রুহুল আমিন, এশিয়ান টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান ফিরোজ মোস্তফা, ক্যামেরা পারসন আজিম, বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নিজস্ব প্রতিবেদক মুশফিক সৌরভ, সময় টেলিভিশনের প্রতিবেদক শাকিল মাহমুদ এবং ক্যামেরা পারসন সুমন হাসান। ঘটনা সম্পর্কে সাংবাদিক মুশফিক সৌরভ বলেন, কলেজের হলে নবীন শিক্ষার্থীদের প্রায়ই র্যাগ দেয় সিনিয়র শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া কলেজের অধ্যক্ষ ও চিকিৎসকদের নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশারের নেতৃত্বে কয়েকজন সিনিয়র ও ইন্টার্ন চিকিৎসক আমাদের ওপর হামলা চালান।
এরপর কিছুক্ষন অবরুদ্ধও করে রাখা হয়।হামলাকারীরা এ সময় বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের ক্যামেরা ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন বলে জানান তিনি। চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ক্যামেরা পারসন রুহুল আমিন বলেন, “মেডিকেল কলেজে র্যাগিংয়ের শিকার এক ছাত্রী অধ্যক্ষের কক্ষে অভিযোগ দিতে গিয়েছিলেন। এই খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে ওই ছাত্রীর বক্তব্য নিচ্ছিলাম।“হঠাৎ কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের ডা. বাকিউল্লাহ ও প্যাথলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক প্রবীর কুমার সাহার নেতৃত্বে ৪/৫ জন চিকিৎসক হামলা শুরু করেন। তারা আমাদের ক্যামেরা ভাংচুর করেন এবং মারধর করেন।”এশিয়ান টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান ফিরোজ মোস্তফা জানান, র্যাগিংয়ের শিকার তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীর অভিভাবকও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনেই হঠাৎ সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়। অধ্যক্ষের সঙ্গে এ হামলায় অংশ নেন কয়েকজন চিকিৎসক ও অফিস সহকারী। র্যাগিংয়ের সঙ্গে জড়িতদের রক্ষা করতেই এ হামলা করা হয়েছে বলে মনে করেন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ব্যুরো প্রধান কাওছার হোসেন রানা। তিনি বলেন, “এই হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করতে হবে। খবর পেয়ে বরিশালের বিভিন্ন স্থান থেকে সিনিয়র সাংবাদিকরা আসেন।
পরে উপাধ্যক্ষের কক্ষে সমঝোতা বৈঠক হয়। “অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার, উপাধ্যক্ষ জিএম নাজিমুল হক, উপ-পুলিশ কমিশনার আশরাফ হোসেন, অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার ফজলুল হক, সিনিয়র সাংবাদিক হুমায়ন কবির, মুরাদ আহমেদ, আকতার ফারুক শাহীন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনসহ অন্যরা এতে অংশ নেন। বৈঠকে অধ্যক্ষ ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং পরে দুইপক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়।” কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, দুদিন আগে ৫০তম ব্যাচের নীলিমা হোসেন জুঁইসহ কয়েকজন তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীকে র্যাগ দেয়। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। এ ঘটনার অভিযোগ দিতেই ওই ছাত্রী অধ্যক্ষের কাছে গিয়েছিলেন। সেসময়ই সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার বলেন, “ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
র্যাগিংয়ের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে যে বিষয়টি ঘটেছে তাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ভুল বোঝাবুঝির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।যে ঘটনা ঘটেছে সে জন্য আমি সবার পক্ষ থেকে ক্ষমা চাচ্ছি। এদিকে, বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন জানান, সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় অধ্যক্ষ প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন। আমরা সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বিষয়টি মিমাংশা হয়েছে।অন্যদিকে এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছন শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাব, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি, বরিশাল নিউজ এডিটরস কাউন্সিল, বরিশাল তরুণ সাংবাদিক ফোরাম, বরিশাল অনলাইন প্রেসক্লাব সহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply