খবর বরিশাল ডেস্কঃ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের জনগণ বার বার নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছে বলে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ।বুধবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে নির্বাচনী জনসভায় এ সব কথা বলেন তিনি।
জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, দেশের গ্যাস বিক্রির প্রস্তারে রাজি না হওয়ায় ২০০১ সালে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা আসতে দেয়া হয়নি। দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কোনো কাজ করেনি বিএনপি৷ ভোট কারচুপি আর গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় বসেছিলো তারা৷ আল্লাহ্ জন বুঝে ধন দেয়৷ তাদের হাতে সম্পদ দিলে তা নষ্ট হয়, আর আমাদের হাতে এলে তা জনগণের কল্যাণে কাজ করে৷ যে কূপে বিএনপি গ্যাস পাইনি, সেই কূপ খনন করে এখন গ্যাস পাওয়া গেছে। আর দেশের জনগণ বার বার নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছে বলে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখন দেশের মানুষের উন্নয়নে কাজ করে, তখন বিএনপি আগুন দিয়ে তা ধ্বংস করছে। তাদের কোনো মন্যুষত্ব নেই বলে ট্রেন-বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যার মতো নির্মম ঘটনা তারা ঘটাতে পারে৷
সিলেটের উন্নয়নকাজ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, খাদ্যের অভাব ঠেকাতে কোনো জমি অনাবাদি রাখা যাবে না৷ গত ১৫ বছরে সম্পন্ন হওয়া বিভিন্ন উন্নয়নকাজের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে নতুন কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন৷
তিনি বলেন, আবার ক্ষমতায় গেলে ঢাকা-সিলেট ছয় লেন হবে৷ সিলেটেও মেট্রোরেল নির্মাণের পরিকল্পনা করা হবে৷ কিন ব্রিজের পাশে নতুন সেতুও নির্মাণ করা হবে৷ এছাড়াও সিলেটে ১০০ বেড সমৃদ্ধ বার্ন ইনস্টিটিউট তৈরি করা হচ্ছে৷ যানজট কমাতে রিংরোড নির্মাণ করা হবে সিলেটে৷
তিনি আরও বলেন, মনোনয়ন বাণিজ্য করতে গিয়ে ২০০৮ সালে নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হয়। আজ তারা বিএনপি-জামায়াত আগুন দিয়ে বাস-ট্রেন পোড়াচ্ছে, মানুষ হত্যা করছে। তাদের নাশকতার শিকারে মানুষ এখন দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে।
এ সময় তারেক জিয়ার কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, লন্ডন থেকে তার নির্দেশে জ্বালাও পোড়াও করে মানুষ মারছে বিএনপি।
আবারও তিনি বলেন, আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারবে, ভোট দিতে দেবে না; ভোটে বাধা দেয়ার এতো সাহস তারা কোথায় পেয়েছে? তাদের জবাব দিতে হবে৷ লন্ডন থেকে হুকুম আসে আর এখানে কিছু মানুষ আগুন দেয়৷ তাদের মনে রাখা উচিত, আগুন নিয়ে খেললে, সেই আগুনেই তাদের হাত পুড়ে যাবে৷
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ভেবেছিলো, দুচারটা গাড়ি পোড়ালেই সরকার পড়ে যাবে৷ আসলে অতভাত দুধ দিয়ে কেউ খায় না৷ দুর্নীতিবাজ, লুটেরা অগ্নিসন্ত্রাস করে, মানুষ মেরে, ভোট বানচাল করতে চায়৷ সেটা করা যাবে না। উন্নয়ন ধরে রাখতে নৌকা মার্কার প্রার্থীদের বিজয়ী করুন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অগ্নি সন্ত্রাসীদের এদেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। সাধারণ মানুষ ভোট চায়, উন্নয়ন চায়। তাই বিএনপি-জামায়াতের হরতাল অবরোধে তারা সাড়া দিচ্ছেন না।
বিকেলে সোয়া ৩টার দিকে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেন তিনি। জনসভাস্থলে পৌঁছে তিনি জাতীয় পতাকা নেড়ে নেতাকর্মীদের উৎসাহিত করেন।
এর আগে হযরত শাহজালাল (র.) ও হযরত শাহ পরাণের (র.) এর মাজার জিয়ারত করেন।এ সফরে তার সঙ্গে রয়েছেন ছোট বোন শেখ রেহানা। এছাড়াও তার সঙ্গে আছেন কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও রয়েছে সিলেটের নেতারা। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সিলেটে পৌঁছান তিনি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জনসভা ও প্রচারণায় অংশ নিতে পূণ্যভূমি সিলেটে রয়েছেন শেখ হাসিনা।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গণভবন থেকে সিলেটের উদ্দেশে রওয়ানা দেন তিনি।
মাত্র তিন সপ্তাহেরও কম সময় বাকি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের৷ সময় হয়েছে ভোটারদের কাছে যাবার৷ প্রার্থীরাও সরব হচ্ছেন গণসমর্থন আদায়ে৷ শুরু হয়েছে নির্বাচনী প্রচারণা৷ আর সেই উদ্দেশ্য সামনে রেখেই আজ সিলেট সফরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা৷
গত প্রায় তিন দশক ধরে দেশের রাজনীতিতে অনেকটা রীতির মতোই এবারও সিলেট থেকেই প্রচার শুরু করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি৷ সূচি অনুযায়ী- বরাবরের মতোই সফরের শুরুতে হযরত শাহজালাল (র:) এর দরগাহ্ শরীফ জিয়ারত করেন৷
সেখানকার কর্মসূচি শেষে যান হযরত শাহ্ পরাণ (র:) এর মাজারে৷ এই সফরেও নিরাপত্তা ছাড়া কোনো সরকারি প্রটোকল নেননি প্রধানমন্ত্রী৷
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply